রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ১৯ জানুয়ারি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসছে চীন। বৈঠকটি আগামী ১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ঢাকায় তিন দেশের সচিব পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সুরের ধারার আয়োজনে ‘পৌষ উৎসব-১৪২৭’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফর করেছেন। সফর শেষে তিনি আমাদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য বলেছেন, আমরা বলেছি সমস্যা নাই বসেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি তিন দেশের সচিব পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের বৈঠক নিয়ে আশাবাদের কথা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা সবসময় আশাবাদী। আমাদের বিশ্বাস রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যাবে।

অতীতে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা তাদের ফিরে গেছে জানিয়ে মোমেন বলেন, আমরা দেখেছি, আগেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়েছে। এখন যারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদেরও তারা ফেরত নেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। আমরা সব সময় আশাবাদীদের দলে। কারণ রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশেতো ফেরত যেতেই হবে।

চীনের আন্তরিকতার কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি বলে চীনের সমালোচনাও করেন মোমেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার আমাদের বলছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে কিন্তু নেয় না।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা। সম্প্রতি মিয়ানমারকে নতুন করে আরও দুই লাখ ৩০ হাজার জনের তালিকা দিয়েছে বাংলাদেশ। দুই লাখ ৩০ হাজারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই-বাছাই করে সেখান থেকে ২৮ হাজার জনকে তাদের বাসিন্দা বলে স্বীকার করেছে মিয়ানমার। এদের মধ্যে ১৪ হাজার রোহিঙ্গার নাম দেশটির ডাটাবেজেই নেই বলে ঢাকাকে জানিয়েছে নেইপেদো। যাচাই-বাছাই করাদের মধ্যে ৩৫০ জনকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিতে আট লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা করেছি। এই তালিকার সব আমরা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর সম্পন্ন করেছি। মিয়ানমার এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই করেছে। এরমধ্যে ওরা কতজনকে ওদের নাগরিক হিসিবে মেনে নিয়েছে এখন এটা আমি বলতে পারব না।

শেয়ার করুন