কুয়েতের সংসদ সদস্যদের (আইনপ্রণেতা) সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশটির মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। মঙ্গলবার কুয়েতি প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা। খবর আল জাজিরার।
দেশটির নতুন সরকার গঠিত হওয়ার এক মাসের মধ্যেই এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটলো। কিছুদিন আগেই মন্ত্রিসভার পুনর্গঠনসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নের সম্মুখীন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন কুয়েতের আইনপ্রণেতারা। গত ১৪ ডিসেম্বর গঠিত হয়েছিল দেশটির নতুন মন্ত্রিসভা।
গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে কুয়েত। এর মধ্যেই মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দেশটির নতুন আমিরের সামনে প্রথম রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কুয়েতের আইনপ্রণেতা ও ক্ষমতাসীন পরিবারের মধ্যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা দ্বন্দ্বের কারণে দেশটিতে এর আগেও কয়েকবার রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এর জেরে সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদের পদত্যাগের ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার।
বুধবার অনুমোদনের জন্য আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমেদ আল সাবাহ’র কাছে পদত্যাগপত্রগুলো জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ। কুয়েতের সরকারি যোগাযোগ কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় পরিষদ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের আলোকে ও জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সরকার তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে।’ তবে এ বিষয়ে আর কিছু জানানো হয়নি।
গত ৫ জানুয়ারি কুয়েতের তিন আইনপ্রণেতা প্রধানমন্ত্রী সাবাহকে প্রশ্ন করার উদ্যোগ নেন। পরে ৩০ জনেরও বেশি আইনপ্রণেতা বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার এই উদ্যোগের পক্ষে সায় দেন। ইস্যুগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিফলিত হয়নি এমন একটি মন্ত্রিসভা গঠন এবং সংসদীয় কমিটি ও স্পিকার নিয়োগে সরকারি হস্তক্ষেপ।
উপসাগরীয় অঞ্চলে কুয়েতেই সবচেয়ে উন্মুক্ত রাজনৈতিক পদ্ধতি রয়েছে। আইন প্রণয়ন ও মন্ত্রীদের জবাহদিহি করার ক্ষমতা রয়েছে দেশটির সংসদের। যদিও জ্যেষ্ঠ পদগুলোর অধিকারী ক্ষমতাসীন পরিবারের সদস্যরাই।
সাম্প্রতিক সময়ে তেলের মূল্য কমে যাওয়া ও করোনাভাইরাসের কারণে কুয়েতের অর্থনীতি তীব্র তারল্য সঙ্কটে ভুগছে। এই অবস্থা কাটাতে একটি ঋণ আইন পাসের প্রচেষ্টা চলছিল। কিন্তু মন্ত্রীদের পদত্যাগের ফলে তা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।