মাত্র দুই দিন পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের মেয়াদ শেষ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন। এদিন ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা সশস্ত্র বিক্ষোভ করতে পারে বলে আগেই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে প্রেসিডেন্টের শপথের দুই দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে ট্রাম্প সমর্থকরা।
রবিবার দেশজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা। বেশ কিছু রাজ্যে তারা প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করেছেন। কোথাও কোনো অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে কোনো কোনো অঞ্চলে প্রতিবাদীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সমর্থকদেরও রাস্তায় দেখা গিয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
মার্কিন ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড আগে থেকেই ৫০টি রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে এফবিআই যে রিপোর্ট দিয়েছিল প্রশাসনকে, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, ক্যাপিটলের মতো ফের বড়সড় কাণ্ড ঘটাতে পারেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্প সমর্থকরা। চারজনের মৃত্যুও হয়েছিল। ওই দিনের ঘটনা মার্কিন ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। তারপরেই দেশ জুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানীতে এবং ওয়াশিংটনে তারা পাহারার দায়িত্ব নিয়েছেন। বেশ কিছু এলাকায় তারা ফ্ল্যাগ মার্চ করেছেন।
ট্রাম্প সমর্থকদের এখনো দাবি, নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন। কারচুপি করে তাকে হারানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গোটা দেশের একাধিক আদালতে মামলা হয়েছিল। কিন্তু কোথাও কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি ট্রাম্প সমর্থকরা। তা সত্ত্বেও তারা প্রতিবাদ বজায় রেখেছেন।
রবিবার ওহাইয়ো, সাউথ ক্যারোলিনা, টেক্সাস এবং মিশিগানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভকারীদের হাতে অস্ত্র ছিল। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, চরমপন্থি গোষ্ঠী বুগালুর সদস্যদের কোনো কোনো মিছিলে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তাদের হাতে অটোমেটিক রাইফেল ছিল। এই গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের আরও একটি গৃহযুদ্ধ ঘটিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করতে চায়।
রবিবার থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড ধরপাকড়ও শুরু করেছে। বেশ কিছু চরমপন্থি গোষ্ঠীর সদস্যদের বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। বাইরে বেরলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলি বিক্ষোভ কর্মসূচি বাতিল করেছে বলেও গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
অন্য দিকে ওয়াশিংটনকে কার্যত দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাতে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা না হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লোহার বাউন্ডারি দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে শপথস্থলের আশপাশ।