মহামারি করোনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারি মাস থেকে খুলতে পারে। এ জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনায় বলা হয়- স্কুল, কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরযুক্ত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানানো যাচ্ছে যে, এখন আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। আপনারা জানেন যে, কোভিড-১৯ অতিমারি চলাকালীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। সেই লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুত করার জন্য ‘গাইড লাইন’ তৈরি করা হয়েছে।
সবাকেই সঙ্গে নিয়ে গাইড লাইন অনুযায়ী আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তাদের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া যায়।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি করতে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদও দেয়া হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল যৌথসভা হয়। সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দফতর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে সব স্তরের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হতে পারে। তবে প্রথমে চলতি বছরের এসএসসি-সমমান ও এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সব স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা হবে। আগামী শনিবার থেকে শিক্ষকদের নিয়মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেও নির্দেশনা দেয়া হবে।
জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘রি ওপেনিং প্ল্যান’ কী কী হতে পারে তা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে দুই মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য তৈরি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মৌখিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। সেটি চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রি ওপেনিং প্ল্যান কী কী হবে সেসব বিষয় নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
কবে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে খোলার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পাঠদান করতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সব বিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। সেটি অনুসরণ করে শিক্ষকরা ক্লাস পরিচালনা করবেন।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে খোলা হবে বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেছিলেন, কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।