ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অডিটোরিয়ামে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

সভাপতির বক্তব্যে মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আমাকে অনেকই প্রশ্ন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করলাম না কেন? কিন্তু বাস্তবিক অর্থে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। একা চেষ্টা করে কোনো লাভও নেই। আমি একা চেষ্টা করে শুধু একটি কাজই সফলভাবে সম্পন্ন করেছি, সেটি হলো- তিতাস নদী খনন। কেউ যদি দাবি করেন তিতাস নদী খননের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করেছেন, আমি বলব সেটা সত্য নয়। কিন্তু সব কাজ একক প্রচেষ্টায় পাওয়া যায় না; আমার সঙ্গে যদি আরও অনেকে যুক্ত হতো তাহলে আমরা একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করতে পারতাম।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় নাম ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়টি আমরা ঢাকায়ও প্রতিষ্ঠা করতে পারতাম, যেমন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম ব্যবহার করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কিন্তু আমরা তা করিনি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই করব। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে আমাদের বন্ধুরা নামকরণের ক্ষেত্রে উল্টাপাল্টা করাতে সরকারের আনুকূল্য পায়নি।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া একসময় অনেক নামীদামী মানুষের জায়গা ছিল এবং তারা সকলেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে শুধু যে এখানকার খ্যাতিমান ব্যাক্তি ছিলেন তা না, তারা পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের খ্যাতিমান ব্যাক্তি ছিলেন। যেমন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নবাব শামসুল হুদা, বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম ব্যারিস্টার আব্দুর রসূল, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ যার খ্যাতি ছিল সমগ্র পৃথিবী জুড়েই, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে জিন্নাহর সামনে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে যিনি কথা বলেছিলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এই কথাগুলো মনে পড়লে আমার মনে হয়, আমরা ঐ অবস্থান থেকে অনেক দূরে সরে গেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যেখানে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে আমরা পিছিয়ে গেছি। আমাদের ভিতরে আর নবাব শামসুল হুদা হয় না, নবাব সিরাজুল ইসলাম হয় না, মনমোহন দত্ত হয় না, আফতাব উদ্দিন খা হয় না। এসব থেকে উত্তরণ করতেই আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করেছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী ঢাকায় বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আমরা ঐ শিক্ষার্থীদের একটা অংশকে ধরতে চাই। আমাদের সাথে অন্যান্য যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে আমি তাদের খাটো করতে চাই না, কিন্তু তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য হচ্ছে আমরা ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে অনেক সাশ্রয়ে পাঠদান করাতে পারব।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২য় বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুহুল আমীন, ট্রাস্টি মো. আলমগীর মিয়া, প্রফেসর ড. দেলোয়ার হোসেন, ড. মো. তৌফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.এস.এম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিভুতি ভূষন দেবনাথ।

শেয়ার করুন