অচিরেই এনডিবির সদস্য হবে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আ হ ম মুস্তফা কামাল
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফাইল ছবি

ব্রিক্স জোট প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সদস্য পদ পেতে যেসব শর্ত রয়েছে, তার সবগুলোই বাংলাদেশের রয়েছে। আশা করছি- অচিরেই বাংলাদেশ এনডিবির সদস্য পদ অর্জন করতে পারবে।’- জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

মঙ্গলবার দুপুরে এনডিবির প্রেসিডেন্ট মি. মার্কোস প্রাদো ট্রয়জোর সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

universel cardiac hospital

এনডিবির প্রেসিডেন্টও বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশর প্রস্তাব বিবেচনা করেন। অতি দ্রুতই পরিবারসহ বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মার্কোস প্রাদো ট্রয়জো।

ভার্চুয়াল সভায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং এনডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী এনডিবির প্রেসিডেন্টকে ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

জানা গেছে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নামের আদ্যক্ষর নিয়ে গঠিত ব্রিক্স জোট প্রতিষ্ঠিত একটি ব্যাংক। এর সদস্য হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী ও এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে আলোচনা হয়।

এনডিবির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালের ২১ জুলাই। ব্যাংকটির মোট মূলধন ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রাথমিক মূলধন ৫ হাজার কোটি ডলার। ২০১৬ সাল থেকে এনডিবি অবকাঠামো এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্রিক্সভুক্ত দেশে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করেছে। এছাড়া ব্যাংকটি অবকাঠামো, সেচ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পয়ঃনিষ্কাশন, সবুজ জ্বালানি এবং নগর উন্নয়ন খাত সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ প্রদান করে থাকে।

কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কার্যক্রমে ব্যাংকটি অংশগ্রহণ করছে। ২০২০ সালে ব্যাংকটি একসঙ্গে ৭২টি প্রকল্পে ২৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে। এনডিবির সদস্য পদ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ব্যাংকের পণ্য এবং পরিষেবা ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সহনীয় সুদ হারে ঋণ নেয়ার সুযোগ তৈরি, ব্যাংকের কৌশল, নীতি, পদ্ধতি ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ এবং সদস্য দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগটি সীমিত হয়ে যাবে। এছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২০২৫), টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ভিশন-২০৪১, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার লক্ষ্যে এনডিবি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অর্থায়নের উৎস হিসেবে সূচনা করবে বলে আশা করছে সরকার।

ভার্চুয়াল সভায় অর্থমন্ত্রী এবং এনডিবির প্রেসিডেন্টের মধ্যে এনডিবিতে বাংলাদেশের ভূমিকা, নতুন ব্যাংকের ঋণের শর্তাবলীসহ বিনিয়োগ খাত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে এনডিবির সদস্যভুক্তির মূল কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হবে এবং এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।

শেয়ার করুন