আনাদোলুর বিশ্লেষণ: চীন-মার্কিন দ্বন্দ্বে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান
ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশি হস্তক্ষেপ ও চীন-মার্কিন রাজনৈতিক প্রভাবের লড়াইয়ে মিয়ানমারে গণতন্ত্র সংহত হতে পারছে না। এতে দেশটিতে সবসময় সামরিক অভ্যুত্থানের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের বরাতে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এমন খবর দিয়েছে।

আংকারা সেন্টার ফর ক্রাইসিস অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজের (এএনকেএএসএএম) জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ সিফেত্তিন ইরোল বলেন, মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে মূল কারণ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন-মার্কিন প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা।

সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় মিয়ানমার ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাবকে সামনে নিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার প্রদর্শন হচ্ছে এই অভ্যুত্থান।

‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণে হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের মানবাধিকার কিংবা গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে হতাশার চেয়েও কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান হারানোর বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে।’

সিফেত্তিন ইরোল বলেন, মিয়ানমারে বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে মালাক্কা প্রণালি ও ভারত মহাসাগরে প্রবেশ এড়িয়ে যেতে পারছেন চীনারা। এতে ভারত ও আমেরিকাসহ অন্যান্য ক্ষমতাধর দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে পারছে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি।

এভাবে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বড় খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছে চীন।

মিয়ানমারের সামরিক সরকার ও চীনকে দমিয়ে রাখতে রোহিঙ্গা মুসলমানসহ দেশটির নৃতাত্ত্বিক এবং সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করা নিয়েও হুশিয়ারি দিয়েছেন এ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, এতে এসব জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দমনমূলক নীতি বাড়বে।

এশীয়বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হায়াতি উনলু বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চীনের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি অপরিহার্য অংশ হচ্ছে মিয়ানমার।

আর সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে রক্তপাত ও উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আঞ্চলিক গবেষক নাজমুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সম্ভবত রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সংখ্যালঘুদের ওপর চড়াও হবে সেনাবাহিনী। নিজেদের জনপ্রিয় রাখতে তারা এমন পদক্ষেপ নিতে পারে। এতে দেশটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে বিলম্ব হবে ও সংঘাত বাড়বে।

শেয়ার করুন