আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে চলা গুঞ্জনই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো। গত কয়েকদিন ধরেই ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গুরুতর অনিয়মের নানা অভিযোগ তুলতে থাকে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেগুলো তেমন গুরুত্ব না পাওয়ায় পার্লামেন্টের অধিবেশন বসার কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি সকালে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এ ধরনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ কোনো বিচার ও যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যদিও অংসান সুচি ও তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিকে(এনএলডি) পছন্দের বিষয়ে আমাদের অনেক আপত্তি রয়েছে, তবু গত বছরের নভেম্বরে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারকে পাশ কাটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেই আমরা মনে করি।
বিভিন্ন ইস্যুতে সুচি ও তাঁর দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমাদের মতবিরোধ থাকা সত্বেও গণতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা বিনির্মাণের স্বার্থে দেশটিতে সেনাবাহিনী কর্তৃক বন্দি নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সাথে আমরাও একমত। পাশাপাশি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকারের বিষয়ে আমাদের অবস্থান হলো— সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিপক্ষে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে।