সু চির প্রধান সহযোগী গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উইন হেটেন
উইন হেটেন। ফাইল ছবি

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চির প্রধান এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির সামরিক সরকার। শুক্রবার উইন হেটেন নামে সু চির ডান হাত হিসেবে পরিচিত ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সামরিক সরকারকে ক্ষমতা ত্যাগের আহ্বানের একদিন পর এমন ঘটনা ঘটলো।

সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক লিগের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, দলের বলিষ্ঠ নেতা উইন হেটেন বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী নেপিদো ত্যাগ করে ইয়াঙ্গুনে যান। পরে মধ্যরাতে মেয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে নেপিদো পুলিশ স্টেশনে আটকে রাখা হয়েছে। ৭৯ বছর বয়সী উইন হেটেন সামরিক শানসের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করার কারণে সুদীর্ঘ সময় বন্দী থেকেছেন।

উইন হেটেনকে সু চির ডান হাত হিসেবে মনে করা হয়। দীর্ঘসময় ধরে তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে মিয়ানমারের ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতারা কী ভাবছেন তা বিশ্লেষণ করেছেন। সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের একটি ইংরেজি দৈনিকে তিনি ‘সামরিক অভ্যুত্থান সুবিবেচনাপ্রসূত নয়’ বলে মন্তব্য করেন।

গত সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অং সান সুচি ও দেশটির মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে আটক করে। ওইদিন নতুন সরকারের সংসদ অধিবেশন বসার কথা ছিল। কিন্তু তাদের আটকের কারণে সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। আশঙ্কা সত্যি করে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয়। তারা এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে ২০১১ সালে থেকে যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সেটা থেমে যায়।

গত নভেম্বর মাসে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন হয়। নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক লিগ বিপুল জয় পায়। কিন্তু সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং লাইং কারচুপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন। তার এমন ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১৬টি দেশের দূতাবাস মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখার আহ্বান জানান। ৩০ জানুয়ারি মিয়ানমারের এক সেনাবাহিনী সংবিধান পরিপন্থি কিছু করা হবে না এমন শপথ করেন। কিন্তু ১ ফেব্রুয়ারি ভোরেই সেনাবাহিনী স্টেট কাউন্সিলর সু চিসহ তারমন্ত্রী সভার ২৪জনকে আটক করে।

ইতোমধ্যে সুচির বিরুদ্ধে অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় তার দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটকের পর থেকে সুচিকে আর জন সম্মুখে দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তাকে রাজধানী নেপিদোতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন