মিয়ানমারে ৮ ঘণ্টা বন্ধ রাখার পর ইন্টারনেট পরিষেবা আবার চালু করেছে সামরিক সরকার। সামরিক যানসহ সেনা টহল বাড়ার পরেও দেশটিতে দশম দিনের মতো বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার মামলায় অং সান সুচিকে আবার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সামরিক সরকার।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইয়াঙ্গুনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, ব্যবসায়িক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বড় শহরগুলোতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার মিয়ানমারের অধিকাংশ বড় শহরে সামরিক যান মোতায়েনের পরেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজির শত শত শিক্ষার্থী ইয়াঙ্গুনের উত্তর শহরে বিক্ষোভ করেছে। দক্ষিণের শহর দাওয়েতে পুনরায় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফেসবুকের ভেরিফাইড লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দেখা গেছে, শত শত প্রতিবাদকারী ব্যান্ড পার্টিযোগে মিছিল করছে।
ইয়াঙ্গুন শহরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেয়া ‘নিয়েন মো’ নামে এক প্রতিবাদকারী বলেন, ‘সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনা টহলের মানে হলো তারা জনগণকে ভয় দেখাতে চাচ্ছে। কিন্তু মানুষ রাস্তায় মিছিল করছে এবং তারা গ্রেপ্তার কিংবা গুলির ভয় করে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নীরব থাকবো না। আমাদের মনের ভয় চলে গেছে।’
মিয়ানমারের এক আইনজীবী জানিয়েছেন, অবৈধভাবে ছয়টি ওয়াকিটকি আমদানি করার অভিযোগে সোমবার সুচির আটকাদেশ শেষে হয়েছে। আগামী বুধবার আদালতের শুনানির আগ পর্যন্ত তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে। অং সান সুচি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন কি না বিচারকের কাছে সেটা জানতে চেয়েছেন।
সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে খিন মাং যাও নামে এক আইনজীবী জানান, তিনি সুচিকে এখন পর্যন্ত আইনের মধ্যে থেকে দেখার চেষ্টা করছেন। তাকে বিচারের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা ন্যায্য হোক বা অন্যায্য হোক আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে সুচির মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। মিয়ানমারের জনগণের এই প্রতিবাদকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বড় বিক্ষোভ হিসেবে অভিহিত করছে।
এর আগে গতকাল রবিবার মিয়ানমারের উত্তরের রাজ্য কাচিনে সেনা মোতায়েন করা হয়। প্রতিবাদকারী এবং সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। কিছু আন্দোলনকারী সরকার বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবাদকারীদের সরাতে পাওয়ার প্লান্টের বাইরে গুলি করে। ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিংয়ে ভিডিওতে গুলি করার দৃশ্য দেখা গেলেও সেটা রাবার বুলেট নাকি লাইভ ফায়ার সেটা বোঝা যায়নি।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, বিক্ষোভের পাশাপাশি জান্তা সরকার সরকারি কর্মীদের ধর্মঘটের সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে।