গুজব উপেক্ষা করে মানুষ করোনা ভাইরাসের টিকা নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে করোনার টিকা নেয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সবাইকে করোনার টিকা নেয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। সবাইকে এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে।
গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ওই দিন ২১ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়। এর পরদিন রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে ৫৪৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়।
মহামারী মুক্তির প্রত্যাশা নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে করোনা ভাইরাসের গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। গতকাল পর্যন্ত দেশজুড়ে ৭ দিনে নয় লাখেরও বেশি মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন।
দেশজুড়ে শুরু হওয়া কর্মসূচির অষ্টম দিনে করোনার টিকা নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। টিকা নেয়ার পর মন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা আসার পরে মানুষ নানা ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে আজ করোনায় আজ মৃত্যুর সংখ্যাও কমে এসেছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’
পুলিশ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, শুধু পুলিশ সদস্যরা না। বাহির থেকে যারা আসছেন তাদেরকেও পুলিশ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচেছ। পুলিশ হাসপাতালে ১৮টি বুথ রয়েছে। প্রতিদিন ভিড় বাড়ায় ১৮টি বুথ করা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সবাই টিকা নিচ্ছে।
অচিরেই পুলিশ হাসপাতাল প্রথম শ্রেণি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এমনটা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল দেশের একটি প্রথম সারির হাসপাতাল। বলার অপেক্ষা রাখে না আমরা আরও আধুনিক, যুগোপযোগী এবং প্রথম শ্রেণির হাসপাতালে উন্নীত করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। অচিরেই আমাদের পুলিশ হাসপাতাল প্রথম শ্রেণি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
পুলিশ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এখন পুলিশ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ এর নিচে চলে আসছে। যেখানে পুরো হাসপাতালই ছিলো কোভিড আক্রান্ত রোগীতে পূর্ণ। আমাদের সেই দিনের কথা মনে হয়, যেদিন আমি প্রথম শব্দটি ব্যবহার করেছিলাম কিংকর্তব্যবিমূঢ়। সেদিন পুলিশ বাহিনীর মধ্যে একটি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। সব জায়গায় একটা আতঙ্ক ছিল, কে কোথায় যাবে? আপনারা জানেন পুলিশের ব্যারাকে একটু কষ্ট করেই থাকতে হচ্ছে। তাই এখানে সংক্রমণের হারটা বেড়ে গিয়েছিল। আমি আগেই বলেছি পুলিশের নেতৃত্বগুণ ছিল বলেই সেইখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে পেরেছি।
‘আর একটা কথা আমি সবসময়ই বলি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পুলিশ কিন্তু এই হাসপাতলেই নয়, তারা কিন্তু ফ্রন্টলাইনার হিসেবেও কাজ করেছে।’-যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
একই হাসপাতালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন করোনার টিকা নেন।
এ সময় পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মঈনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।