স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও আনিস আহমেদকে যাবজ্জীবন সাজা থেকে অব্যাহতি দেয়ার ক্ষেত্রে আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। এর আগে মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় নজরুল শিক্ষালয় নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রী।
৪০১ ধারায় আসামি হারিছ ও আনিসের সাজা মওকুফ করার বিষয়ে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কি না? স্পর্শকাতর বিষয়টি এতদিন কেন গোপন রাখা হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪০১ ধারার সকল নিয়ম মেনেই দুই আসামিকে সাজা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে যথাযথ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে আসামিদের পক্ষ থেকে কে এই আবেদন করেছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি মন্ত্রী।
বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো ‘লুকোচুরি’ নেই দাবি করে তিনি বলেন, এটা নিছক কমিউনিকেশন গ্যাপ। এই ধারার বিষয়ে ইতিমধ্যেই আইনমন্ত্রী সহজ বিশ্লেষণ দিয়েছেন। সে জায়গা থেকে এ প্রশ্নের জবাব আপনারা আগেই পেয়েছেন।
হারিছকে যদি ক্ষমাই করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেড আসামির তালিকায় তার নাম কেন এখনো দৃশ্যমান? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক হয়ে যাবে।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, সামনের নতুন বিল্ডিংটা কিন্তু আমি আপনাদের কথা মতো করে দিয়েছিলাম। পুরান বিল্ডিং ভেঙে নতুন বিল্ডিং করতে চেয়েছেন। সেটাও করে দেব। আমাদের দাবি কিন্তু আছে। সরকারের দাবি হচ্ছে আপনি ভালো রেজাল্ট করবেন এবং এখানে যেন সবাই শিক্ষার সুযোগ পায়।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার কী চায়? আমরা যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছি আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এই ধারাটা অক্ষুণ্ন রাখে। তারা যেন শিক্ষা-দীক্ষায় জ্ঞানে তাদের প্রতিভা বিকশিত করে। তারা যেন দায়িত্ব নিতে পারে এবং উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখে।
আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা ২০৪১ সালের স্বপ্ন দেখছি। আমাদের ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নে তারা যেন নেতৃত্ব দিতে পারে। এখানে যারা পড়তে আসবে তারা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে এটাই আমাদের আশা।
দেশের সব গৃহহীন ঘর পাবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতি জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি এ দেশটাকে স্বপ্ন দেখতেন একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। যেখানে সবাই স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং গৃহের সন্ধান পায়। তারই কন্যা সেই কাজটি করছেন। তিনি গৃহহীনদের একটি করে ঘরের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। একটা মাস্টার প্লান তিনি নিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন সবাইকে জ্ঞানের আলোকে শিক্ষার আলোকে আলোকিত করবেন। আমরা যদি পেছনে ফিরে তাকাই ২০০১ যখন আমরা ক্ষমতা থেকে সরে গিয়েছিলাম, মানে আমাদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিদায় দিয়েছিল, তখন শিক্ষার হার ছিল ৬০ শতাংশ। যখন আমরা আবার ক্ষমতায় এলাম তখন দেখলাম শিক্ষার হার ৪৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মানুষ এগিয়ে যায়, দেশ এগিয়ে যায়, আর আমরা পিছিয়ে আসছিলাম, সেই অভিজ্ঞতা তো আমাদের আছে।