‘প্রকৃত গুণীজন পুরস্কারের আশায় কাজ করেন না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা শহীদগণ যেমন জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান, তেমনি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট গুণীজনও জাতির গর্ব ও অহংকার। যদিও প্রকৃত গুণীজন পুরস্কার বা সম্মাননার আশায় কাজ করেন না, তবুও পুরস্কার বা সম্মাননা জীবনের পথচলায় অনিঃশেষ প্রেরণা জোগায়। একুশের চেতনাকে ধারণ করে দেশের শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির বিকাশ এবং আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভূত অবদান রাখছেন, তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা গৌরবময় একুশে পদক প্রদান করছি।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ‘একুশে পদক ২০২১’ প্রদান উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার এসেছে ফেব্রুয়ারি, ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাস। এসেছে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মরণে একুশে পদক প্রদানের আনন্দঘন মুহূর্ত। একুশ মানেই মাথা নত না করা, একুশ মানেই একাত্তরের বিজয়ের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে দুর্বার অভিযাত্রা, ভাষাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।

তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে যে সকল ভাষা শহীদ প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, আজ আমি তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল ভাষাসৈনিকদের।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতোপূর্বে প্রতিবছর বাংলাদেশের অল্পসংখ্যক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে জাতীয় পর্যায়ে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত করা হতো এবং পদকপ্রাপ্তদের সম্মানী অর্থের পরিমাণও ছিল যৎসামান্য। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য ব্যক্তিদের পুরস্কার হিসেবে প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে ২০২০ সালে আমরা চার লাখ টাকায় উন্নীত করেছি। অনুরূপভাবে, আমরা ২০১৮ সাল থেকে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১-এ উন্নীত করেছি। জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৯৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। এবারও আমরা ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য মরণোত্তর তিনজন, মুক্তিযুদ্ধে তিনজন, ভাষা-সাহিত্যে তিনজন, শিল্পকলায় সাতজনসহ সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, অর্থনীতি ও সমাজসেবায় একজন করে মোট ২১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই পদক প্রদানের জন্য মনোনীত করেছি। যারা মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন, তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি, আর যারা আজ পুরস্কার গ্রহণ করছেন তাদেরও আমার আন্তরিক অভিনন্দন।

তিনি বলেন, আমরা যে চেতনায় বলীয়ান হয়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি এবং একই চেতনায় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সেই চেতনা এবং জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে গত ১২ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা ২০২০-২১ সালব্যাপী মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। আগামী মাসে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো। ২০২১-২০৪১ পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি এবং ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ইনশাআল্লাহ, অচিরেই আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার দেশ ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা করবো।

শেয়ার করুন