আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অনেকদিন দুরে। যে কারণে আলোচনায় নেই, শিরোনামেও নেই জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসির হোসেন। এবার শিরোনামে এসেছিলেন বিয়ে করে। নিজেই বিয়ে করার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন সেই খবর। কিন্তু নাসির যে আরেকজনের বউকে বিয়ে করে ফেলেছেন! সেই খবরই এখন পুরো ভাইরাল।
বিয়ে করে কোথায় সংসারে থিতু হবেন, না এখন উল্টো বিপাকে পড়ে গেলেন নাসির। সপ্তাহ খানেক আগে, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি, কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মির সঙ্গে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছিল গায়ে হলুদ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।
নাসির নিজেই বিয়ের ছবি ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন রাকিব হাসান নামে তামিমার সাবেক স্বামী দাবি করা এক ব্যক্তি অভিযোগ তুললেন, ‘তাদের বিবাহ বিচ্ছেদই হয়নি এখনও। অথচ, এখন শুনতে পাচ্ছি নাসির নাকি আমার স্ত্রীর স্বামী।’
রাকিব হাসান এ নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডিও (সাধারণ ডায়েরি) করেছেন। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস গণমাধ্যমের কাছে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমের কাছে রাকিব হাসান দাবি করেন, আইনগতভাবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি এখনও। তার আগেই নাসিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তামিমা।
রাকিব এরই মধ্যে জিডির কপি এবং তাদের কাবিন নামার কপি সংবাদ মাধ্যমের কাছে সরবরাহ করেছেন।
নাসির-তামিমার বিয়ের আনন্দের রেশে কাটতে না কাটতেই দৃশ্যপটে এসে হাজির হলেন তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নাসির এবং রাকিবের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ। ওই কথোপকথন থেকেই তামিমার প্রথম বিয়ের সত্যতা মেলে। নাসিরও স্বীকার করেন, সবকিছু জেনেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে মিডিয়ার কাছে রাকিব হাসান বলেন, হঠাৎ করে শুনলাম নাসির আমার ওয়াইফের হাজব্যান্ড হয়ে গেছে। আমার বউয়ের সঙ্গে ডিভোর্স ছাড়া সে তামিমাকে বিয়ে করেছে। সে (তামিমা) আমাকে এখনো কোনো কাগজ পাঠায়নি। হঠাৎ করে আমি শুনতেছি যে সে বিয়ে করে ফেলেছে। আমার এক বন্ধু বলতেছে, দেখেন তো রাকিব ভাই, তামিমা আপু তো নাসিরকে বিয়ে করে ফেলেছে। আমি নিজেও অবাক হয়েছি। পরে আমি তামিমাকে ফোন দিয়েছি, এসএমএস করেছি, সে কিছুর জবাব দেয়নি। পরে আমি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছি।
রাকিব জানিয়েছেন, তাদের ৮ বছরের একটি মেয়ে আছে। তিনি বলেন, এখনও আমাদের ডিভোর্স হয়নি। কোনো নোটিশ ছাড়া কীভাবে আমার স্ত্রী ৮ বছরের বাচ্চাকে ফেলে অন্য একজনকে বিয়ে করলো সেটাই আমি বুঝতে পারছি না।
জিডি করার পর নাসির ফোন দিয়েছেন রাকিবকে। ওই ফোনের রেকর্ড এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। এ নিয়ে রাকিব বলেন, খবরটি শোনার পর আমি তামিমার বাসায় লোক পাঠাই। কিন্তু তামিমার মা জানান, তিনি নাকি রাকিব নামের কাউকে চেনেন না। পরে তার মা পর্দার আড়ালে গিয়ে নাসিরকে সব জানান। এরপর নাসির কাল দুপুরে আমাকে ফোন দিয়েছেন। তিনি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আপনি কি চান না তামিমা সুখে থাকুক? আমি বুঝলাম না, আমার বউ তার কাছে কেন সুখে থাকবে?
রাকিব এরপর বলেন, আমি ২০১১ সালে তামিমাকে বিয়ে করেছি। তখন সে মাত্র এসএসসি পাস করেছিল। এরপর আমি তাকে এইচএসসি ও অনার্স শেষ করাই। তার এই চাকরি পাওয়ার জন্যও আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। আমি জানি না সে এটা কীভাবে করল। এখন আমি এই আইনি লড়াইটা চালিয়ে যাব।
নাসির-রাকিবের যে অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেখানে নাসির বলেছেন, তিনি সব কিছু জেনে-বুঝেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন। নাসির রাকিবকে বলেন, সবকিছু জানতাম। ওর বাচ্চা, আছে বিয়ে হইছিলো, বয়ফ্রেন্ড ছিলো। জেনে শুনেই বিয়ে করছি। আপনি চান না তামিমা হ্যাপি থাক।
এ কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, নাসির সবকিছু জেনেই আরেকজনের স্ত্রীকে বিয়ে করেছিলেন। তবে, এখন সেই বিয়ে নিয়েই বিপাকে তিনি।