কাদের মির্জা-বাদলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, বসুরহাটে ১৪৪ ধারা জারি

নোয়াখালী প্রতিনিধি

কাদের মির্জা-বাদল
কাদের মির্জা-বাদল। সংগৃহীত ছবি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইউএনও জানান, সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার বিচার দাবিতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা রুপালি চত্ত্বরে সোমবার বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন। একই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলও কাদের মির্জার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। সংঘাত এড়াতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না হয় সেজন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পৌরসভাজুড়ে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা ‍পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

জানা গেছে, সাম্প্রতি কোম্পানিগঞ্জে একক সভা-সমাবেশ করে বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আলোচিত হয়ে ওঠেন কাদের মির্জা। গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তার বিরুদ্ধে মাঠে নামেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলও।

ওই দিন উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশীরহাট বাজারে কাদের মির্জা ও বাদলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন তিন সাংবাদিকও। এর মধ্যে বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির নামে একজন সাংবাদিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

শুক্রবারের সংঘর্ষের পর ফেসবুক লাইভে এসে কাদের মির্জা বলেছিলেন, ‘একরামুল করিম চৌধুরীর সন্ত্রাসী বাহিনী, নিজাম হাজারীর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার চাপ্রাশিরহাটের চরফকিরার মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে পুলিশের সহযোগিতায়। পুলিশের সামনে থেকে আমার লোকদের ওপর গুলি করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ জনের মতো আহত হয়েছে। অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এই এলাকার কি অভিভাবক নাই? আজকে যদি একটা মায়ের বুক খালি হয় এটার জন্য ওবায়দুল কাদের, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন এবং প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।’

তবে পরদিন শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন মির্জা কাদের। ফের ফেসবুক লাইভে এসে তিনি সকল কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘নোয়াখালীর রাজনীতির চলমান সংকট নিরসনে আমাদের সকলের আস্থার শেষ ঠিকানা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে আমাদের পূর্বঘোষিত সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলাম। আমার দাবি- দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ণ করা হোক। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের সাহেবের হস্তক্ষেপে সকল সমস্যার সমাধান অতি শিগগিরই হবে।’

এর একদিন পরই আবার কর্মসূচি ঘোষণা করলেন আবদুল কাদের মির্জা। মূলত সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যায় বাদল ও তার অনুসারীদের দায়ী করে বিচারের দাবিতে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন কাদের মির্জা।

শেয়ার করুন