টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফাইল ছবি

দেশে চলছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকার প্রয়োগ। ২৩ লাখের বেশি মানুষ ইতিমধ্যে টিকা নিয়েছেন। তবে টিকা নিলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাইকে মাস্ক পরতে এবং নিয়মিত হাত ধুতে আবারও তাগিদ দিয়েছেনতিনি।

আজ সোমবার বিকালে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

সরকার আগাম ব্যবস্থা নেয়ায় বাংলাদেশ টিকা পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাথে সাথে সবাইকে সুরক্ষিত থাকার ব্যবস্থাও রাখতে হবে, এটা এই কারণে যে এটার কার্যকারিতা কতটুকু, তা গবেষণার পর্যায়েই আছে। তবুও অন্তত মানুষকে সুরক্ষা দিচ্ছে। নিজেকে আরও সুরক্ষিত করতে হবে, এই কারণে দ্বিতীয় ডোজও দিতে হবে।

বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির জন্য যা করে দিয়ে গেছেন তা ধরে রাখতে হবে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। সেই সংস্কৃতি ঐতিহ্য আমাদের ধরে রাখতে হবে।

তৎকালীন পাকিস্তানে বাঙালির ভাষার ওপর আঘাত আসার ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা আঘাত হেনেছিল আমাদের সংস্কৃতির ওপর, ভাষার ওপর। এর প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, বঙ্গবন্ধু তখনই তার প্রতিবাদ শুরু করেন। শুধু প্রতিবাদই নয়, ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে অন্যান্য দলকে নিয়ে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। আর সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে সেই পাকিস্তান আমলে, একটি রাষ্ট্র হওয়ার বছরও পার করেনি তখন, তিনি বারবার কারাবরণ করেন।

১৯৭১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুর দেয়া বক্তৃতা উদ্ধৃত করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫২ সালের আন্দোলন কেবলমাত্র ভাষা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এ আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এ কথার মধ্য দিয়েই কিন্তু আমরা অন্তত এইটুকু শিক্ষা নিতে পারি যে এই ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষা আন্দোলন না। এই ভাষা আন্দোলন আমাদের সার্বিক বাঙালি জাতি হিসেবে অর্জনের আন্দোলন। এবং তিনি সেটা আমাদের করে দিয়ে গেছেন। এটাকে ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছিল, তারা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা না ভেবে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতাকে আমাদের অর্থবহ করতে হবে। এই স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

দেশের মানুষের জীবনকে অর্থবহ ও সুন্দর করে গড়ে তুলতে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের গৃহহীন মানুষদের ঘর করে দেওয়ার পাশপাশি দেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যের কথাও বলেন সরকারপ্রধান।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন