মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এই ঘটনাকে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের ভয়াবহতম দিন হিসেবে উল্লেখ করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, গতকাল শনিবার থেকে জান্তা সরকার অভ্যুত্থানবিরোধীদের সহিংসভাবে দমন শুরু করে। রবিবার ইয়াঙ্গুন, দাওয়েই এবং মান্দালাইসহ আরও কয়েকটি শহরে নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক নেতা অং সান সুচিকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দেয় দেশটির সেনাবাহিনী। এর পরদিন থেকে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ রাজপথে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। প্রথম কয়েক সপ্তাহ সেনা সরকার বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হিসেবে নিলেও ক্রমশ বিক্ষোভকারীদের ভয়াবহভাবে দমন শুরু করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বিক্ষোভকারীদের এমন সহিংস দমনের নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, তাদের কাছে বিক্ষোভে ১৮ জন নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হওয়ার বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি এক বিবৃতিতে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মিয়ানমারের জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন কখনো অসহিংস প্রতিবাদকারীদের ওপর ভয়ংকর শক্তি প্রয়োগ সমর্থন করে ।
অ্যাকটিভিস্ট এবং মেডিকেল কর্মীরা বলেন, মিয়ানমারের সর্বোচ্চ শহর ইয়াঙ্গুনে পুলিশের স্টান গ্রেনেড, টিয়ারশেল এবং গুলিতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে।
রোববারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের ধাওয়ায় বিক্ষোভকারীরা ছোটাছুটি করছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইয়াঙ্গুনের বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভে স্টান গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সেসময় সেনা সদস্যদের পুলিশকে উৎসাহ দিতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির প্রথম ক্যাথলিক কার্ডিনাল চার্লস মং বো টুইটারে বলেছেন, ‘মিয়ানমারের অবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রচারকৃত ছবিতে দেখা গেছে, রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন সহকর্মীরা।
পায় জ হেইন নামের একজন উদ্ধারকর্মী এএফপিকে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরে তিনজন নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে নিহত হন। ২০ জনের মতো আহত হন রাবার বুলেটে। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।