স্রেফ সৌভাগ্যই বলতে হবে একে, অন্য কিছু নয়। গোল গড়ে বার্সা তখনও পিছিয়ে ২-১ ব্যবধানে। ম্যাচ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজবে বাজবে করছিল। ইনজুরি টাইমও প্রায় শেষ, এমন মুহূর্তেই কি না ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকের দুর্দান্ত এক হেড। সেভিয়া সেই হেডটাকে আর বাঁচাতে পারলো না। গোল হয়ে গেলো।
সুতরাং, গোল গড় দাঁড়িয়ে গেলো ২-২। তো, বিজয়ী দল নির্ধারণ করার জন্য বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা চালাতে বাধ্য হলো রেফারিরা। ততক্ষণে কিন্তু ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছে সেভিয়া। অতিরক্ত সময়ে পরিণত হলো ৯ জনের দলে। দু’জন খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দিলো রেফারি।
এমন সুবর্ণ সুযোগ বার্সার মতো দল হারায় কী করে? সুতরাং, জয়সূচক গোলটিও আদায় করে নিলো তারা অতিরিক্ত সময় থেকে। শেষ পর্যন্ত গড় গোলের ব্যবধান দাঁড়িয়ে গেলো ৩-২। কোপা ডেল রে’র ফাইনালে পৌঁছে গেলো বার্সেলোনা।
ম্যাচটা ছিল ন্যু ক্যাম্পে। নিজেদের মাঠেই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বার্সার। কিন্তু সৌভাগ্য তাদেরকে পৌঁছে দিল ফাইনালে। কোপার সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সেভিয়ার মাঠে গিয়ে ২-০ গোলে হেরে এসেছিল বার্সা। নিজেদের মাঠে তাই অন্তত ৩ গোলের ব্যবধানে জয় প্রয়োজন ছিল তাদের।
ম্যাচের ১২তম মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ফ্রান্স স্ট্রাইকার ওসমান ডেম্বেলের দুর্দান্ত এক শটে সেভিয়ার জাল কেঁপে ওঠে। ওই এক গোল দিয়েও কিন্তু বার্সা স্বস্তিতে ছিল না। তাদের প্রয়োজন আরও দুই গোল; কিন্তু কোনোভাবেই সেভিয়ার জাল খুঁজে পাচ্ছিল না তারা।
বরং, দ্বিতীয়ার্ধে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল সেভিয়া। ৭২তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় সফরকারীরা। কিন্তু লুকাস ওকামপজের দুর্বল শট নিজের হাতের মধ্যেই চেপে ধরেন অ্যান্ডার টার স্টেগান।
ইনজুরি টাইতে গিয়ে বক্সের সামনে ফ্রান্সিসকো ট্রিনকাওকে ফাউল করার অপরাধে দ্বিতীয় হুলদ কার্ড দেখেন সেভিয়ার ফার্নান্দো। দুই হলুদ কার্ড মানে লাল কার্ড। মাঠ থেকে বহিস্কার হলেন ফার্নান্দো। ফ্রি-কিক নেন মেসি। বল ওয়ালে লেগে চলে যায় কর্নারে। কর্নার কিক নেন মেসি। সেখান থেকে ভেসে আসা বলে বাম পাশ থেকে ক্রস করেন আন্তোনিও গ্রিজম্যান। সেটাকেই হেড করে সেভিয়ার জালে জড়ান পিকে।
এই গোলের সঙ্গে সঙ্গেই সমতায় ফেরে বার্সা। অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পরই গোল আদায় করে নেয় বার্সেলোনা। বাম পাশ থেকে দুর্দান্ত এক ক্রস করেন জর্দি আলবা। তাতেই অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় মাথা ছোঁয়ান মার্টিন ব্র্যাথওয়েট। এই এক গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় বার্সার জয়। ম্যাচের ১০৩ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন সেভিয়ার লুক ডি জং।
এই জয়ে অ্যাতলেটিকো বিলবাওয়ের বিপক্ষে কোপা ডেল রে’র ফাইনাল নির্ধারিত হলো বার্সার।