প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মের্কেলের বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে। রাজতন্ত্রের বিরোধিতায় ব্যবহার করা হ্যাশট্যাগ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
সিবিএসে এই সাক্ষাৎকার প্রচার হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। জনপ্রিয় গণমাধ্যম ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাত থেকে #AbolishTheMonarchy টুইটারে ট্রেন্ড করছে।
এছাড়া সিবিএসে প্রচার হওয়া এই সাক্ষাৎকার ১৭ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে। রেকর্ড ভিউয়ের কারণে টেলিভিশনের রেটিংও বেড়ে গেছে। ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সীরা যারা টেলিভিশন দেখতে অভ্যস্ত নয় তাদের এই খবর টেনে নিয়ে এসেছে স্ক্রিনে।
অপরাহ উইনফ্রেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ পরিবারের খেতাব ছেড়ে দেওয়া মেগান মের্কেল অভিযোগ করেন, তার ছেলে অর্চি গর্ভে থাকতে গায়ের রং নিয়ে শঙ্কায় ছিল রাজপরিবার। তিনি ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছেন। তার সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বাকালীন দিনগুলোতে কী কী দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, সেসবের বর্ণনাও দেন তিনি। ওই সময় আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন মেগান।
উইনফ্রে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, মেগান বর্ণবাদের যে অভিযোগ তুলেছেন সেটি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে উদ্দেশ্য করে নয়।
মেগান ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, সন্তানের গায়ের রং নিয়ে উদ্বেগের কথা রাজ পরিবারের বিশেষ এক সদস্য তাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার নাম খোলসা করেননি তিনি।
অপরাহ উইনফ্রের উপস্থাপনায় রোববার মার্কিন টেলিভিশন সিবিএসের টকশোতে হাজির হয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান। সেখানেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরেুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তিনি।
মেগানের মা একজন কৃষ্ণাঙ্গ ও বাবা শ্বেতাঙ্গ। টকশোতে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত তিনি অতি সরল ছিলেন। কিন্তু সহযোগিতা চেয়েও আদৌ না পাওয়ার পরে তার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয় এবং নিজের ক্ষতি করার চিন্তাও তিনি করেছিলেন।
মেগান বলেন, ‘ওরা ওকে প্রিন্স বা প্রিন্সেস বানাতে চায়নি, ওর লিঙ্গ কী হবে তা না জেনেই। এটা রীতিবিরুদ্ধ হতো। আর এ কারণেই পরবর্তী সময় ও নিরাপত্তাও পেত না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন মাসগুলোও আমার একইরকম ছিল, বারবার ওই কথাগুলোর মধ্যেই আমরা ছিলাম, ‘তোমাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে না, এমনকি কোনো উপাধিও না। আর ও যখন জন্মাবে তখন ওর গায়ের রং কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বেগ আর কথাবার্তাও চলছিল।’
এই বহুল প্রতীক্ষিত সাক্ষাৎকারটি এমন এক সময়ে এলো যখন একদিকে মেগান-হ্যারি এবং অন্য দিকে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের মধ্যে তিক্ত বিবাদ চলছে। প্রিন্স হ্যারি ও মেগান সম্প্রতি তাদের রাজকীয় দায়িত্ব ত্যাগ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে হ্যারি-মেগান দম্পতি ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতিনিধিত্ব আর না করার সিদ্ধান্তের কথা জানান। স্বাধীন জীবনযাপন করতে তারা রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যান। বর্তমানে এই দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করছেন।