বিশ্বের প্রতি তিনজন নারীর একজন কোনো না কোনো সময় যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নারীদের প্রতি নৃশংসতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক গবেষণার পর মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। খবর টেলিগ্রাফের
এ বিষয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য সেবার মানের আরও উন্নতি এবং নারী-পুরুষের মধ্যে আর্থিক বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
২০০০ সাল থেকে শুরু ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের ৩১ শতাংশ নারী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। যা সংখ্যায় ৮৫ কোটি ২০ লাখের বেশি।
এই জরিপের লেখক ক্লাউডিয়া গার্সিয়া-মরেনো মনে করেন কিছু কিছু অঞ্চলে অর্ধেকের বেশি নারীরা কোনো না কোনো ভাবে নিপীড়নের শিকার হন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চল, সাব সাহারা আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নারী নির্যাতন বেশি হয়। সবথেকে কম নিপীড়নের শিকার হন ইউরোপের নারীরা, এ ক্ষেত্রে তাদের হার ২৩ শতাংশ।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই সকল নারীরা আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়াই পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়। কিন্তু এরপরও তারা এ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। সমঝোতার ভিত্তিতে পারষ্পরিক সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং পরস্পরের সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ছোট থেকেই শিশুদের স্কুলে শিক্ষা দেওয়া উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশে এবং সব সংস্কৃতিতে নারীদের উপর নৃশংসতা খুবই নিয়মিত চিত্র। যার ফলে লাখ লাখ নারী এবং তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। করোনা মহামারীর সঙ্গে নারী নির্যাতন আরও বেড়ে গেছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, অধিকাংশ সময়ে স্বামী বা সঙ্গীর হাতেই নারীরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হন। গরীব দেশগুলোতে এই চিত্র হতাশাজনক।
যৌন নিপীড়নের অনেক তথ্য অজানা থাকার কারণে জরিপে নিপীড়িত নারীর প্রকৃত সংখ্যা উঠে আসে না বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।