ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল ও দলের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাহস নিয়ে স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংসকারীদের প্রতিরোধ করতে হবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল ও কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এই ডাক দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
এদিকে প্রতিবাদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রেস ক্লাব এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নামে। অন্যদিকে সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাব, কদম ফোয়ারা, পুরানা পল্টন মোড়,সচিবলয়সহ আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।
ফখরুল বলেন, এই সরকার গণতান্ত্রিক সরকার নয়। তারা জোর করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বেআইনিভাবে ভোটের আগের রাতে ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করেছে। এই আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যুবদল নেতা মজনুসহ এই আইনে গ্রেপ্তার সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে মিথ্যে মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশান্তরিত করা হয়েছে। আজকে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। যারা রাজনীতি করেন না, তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এতো ভয় পান কেন? সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পরও চারদিক বন্ধ করে নেতাকর্মীদেরকে সমাবেশে আসতে দেন না। কারণ আপনারা জানেন নেতাকর্মী ও জনগণ যদি জেগে ওঠে, তাহলে আপনাদের এই বেআইনি ক্ষমতা আর টিকে থাকবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কার্টুনিস্ট কিশোরের ওপর কিভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে, মুশতাক কিভাবে মারা গেছেন; তার দু’টি ঘটনা মাত্র প্রকাশ পেয়েছে। আমি কার্টুনিস্ট কিশোরকে বাহবা দিতে চাই। তিনি নিজের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে মামলার আবেদন করেছেন। সবাইকে এই সাহস নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’
ফখরুল আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের স্বাধীনতার সকল চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমরা সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করুন। ২০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে দেয়া গায়েবি মামলাও প্রত্যাহার করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে যারা আছেন, দেশের সমস্ত নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছেন। আপনাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। অবিলম্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই সরকারকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার প্রমুখ।