মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানবিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হত্যায় মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী কৌশল ও যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত অস্ত্র প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার এমন অভিযোগ এনেছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর আল জাজিরার
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তাদের বিশ্লেষণে বলেছে যে, ৫৫টি ভিডিও ক্লিপ থেকে বিক্ষোভকারীদের সংঘবদ্ধভাবে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যার প্রমাণ মিলেছে।
সংস্থাটির ক্রাইসিস রেসপন্স পরিচালক জোয়ান্নে মেরিনার বলেন, সাধারণ মানুষকে হত্যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এসব কৌশল নতুন নয়। কিন্তু এর আগে তাদের এমন উন্মত্ততা দেখতে পারেনি বিশ্ব।
অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাবে ৫০টির বেশি ভিডিও বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, ভিডিওতে ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে যে যুদ্ধক্ষেত্রে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয় সেগুলো বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রের জন্যই যথাযথ, পুলিশের ব্যবহারের জন্য নয়। বিক্ষোভে তারা নির্বিচারে তাজা গুলি ব্যবহার করেছে।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও নেত্রী অং সাং সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে তারা। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ঘোষণা দেয় মিয়ানমার জান্তা।
সেনা সরকারের প্রতিশ্রুতি না মেনে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তা নেমে আসে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সরাসরি গুলি চালিয়ে অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা করেছে পুলিশ। সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে তারা।
সম্প্রতি ভারতে পালিয়ে আসা মিয়ানমার পুলিশের কয়েকজন সদস্য রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে, তাদেরকে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এমনকি তারা নিহত না হওয়া পর্যন্ত গুলি করতে বলা হয়েছিল।