পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফের নাম যে আগে ইউসুফ ইয়োহানা ছিল তা সবারই জানা। ৩১ বছর বয়সে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে নাম বদলে নিজের নাম মোহাম্মদ ইউসুফ রাখেন। স্ত্রী তানিয়ার নাম বদলে রাখেন ফাতিমা।
ওয়ালিস মাথিয়াস, আনতাও ডি সুজা এবং ডানকান শার্পের পর চতুর্থ খ্রিস্টান ক্রিকেটার হিসেবে পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ইউসুফ। পাকিস্তানের প্রথম অমুসলিম অধিনায়কও তিনি।
কিংবদন্তি এই পাক ব্যাটসম্যানের ভাষ্যে— ইসলাম গ্রহণের পর মহান আল্লাহতায়ালার কাছ থেকে বিশেষ উপহার পেয়েছেন তিনি। ২০০৫-এর জুনে ইসলামে দীক্ষিত হন তিনি। পরের মৌসুমে (২০০৬ সালে) টেস্ট ক্রিকেটে এক হাজার ৭৮৮ রান করতে পারেন, যা এখনও এক বছরে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড।
সম্প্রতি উইজডেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ইসলামধর্ম গ্রহণের পেছনের গল্প শোনাতে গিয়ে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ ইউসুফ।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের শুরুতে প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ১৯৯ বলে ১৭৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন ইউসুফ। এর পর সে বছরে একে একে ৯টি টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। এদের মধ্যে একটি হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরির রেকর্ডও রয়েছে।
২০০৬ সালটি ছিল ইউসুফের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সাফল্যমণ্ডিত ও উজ্জ্বল একটি বছর। আর বিশ্বরেকর্ড গড়া সেই বছরকে আল্লাহর তরফ থেকে আসা বিশেষ উপহার হিসেবে বিশ্বাস করেন এই সাবেক পাক অধিনায়ক।
ইসলামধর্ম গ্রহণের পর থেকেই হৃদয়ে অন্যরকম শান্তি অনুভব করতে শুরু করেন বলে উইজডেনকে জানান মোহাম্মদ ইউসুফ।
বলেন, ‘২০০৫ সালের শেষ দিকে আমি মুসলিম হয়ে যাই এবং প্রথমবারের মতো নামাজ আদায় করি। এর পর আমি দাড়ি রাখা শুরু করি এবং নিজের মধ্যে অন্যরকম শান্তি অনুভব করি, যা আমার রাস্তায় আসা সব চ্যালেঞ্জ জিততে অনুপ্রাণিত করে। ২০০৬ সালে আমি কঠোর অনুশীলনও করিনি। হৃদয়ে আল্লাহর রহমত বিরাজ করছিল। সেই শান্ত ও স্থিতিশীল মন নিয়েই খেলে গেছি। আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের বছরের পর বছর ধরে টিকে থাকা রেকর্ডটি ভাঙতে পারব। কিন্তু আমি যেহেতু শান্ত এবং মানসিক দিক থেকে নিজের সেরা অবস্থানে ছিলাম, তখন আমার মনে হয়েছিল কোনো কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না। সাবলীলভাবে খেলে গেছি। আমার বিশ্বাস—ইসলামধর্ম গ্রহণ করায় ২০০৬ সালের অসাধারণ পারফরম্যান্সকে আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ উপহার হিসেবে পেয়েছি।’