বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছে সরকার। আগামী ১৭ মার্চ শুরু হতে যাওয়া এ আয়োজনের থিম ‘মুজিব চিরন্তন’। অনুষ্ঠানমালায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরা হবে। এতে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা।
শুক্রবার (১২ মার্চ) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ১৭ মার্চ শুরু হয়ে অনুষ্ঠানমালা চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে ১৭, ১৯, ২২, ২৪ ও ২৬ মার্চ- এই পাঁচ দিন বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। এসব দিনের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে ৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থাপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এই পাঁচ দিন দর্শকরা উপস্থিত থাকতে পারবেন।
অনুষ্ঠান প্রতিদিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হবে। প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৩০ মিনিটের বিরতি থাকবে। প্রতিদিন থাকবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যোগদানকারীদের অনুষ্ঠানের আগে কোভিড-১৯ সনদ সংগ্রহ করতে হবে। কোভিড টেস্টের কার্যকারিতা থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। টেস্টের জন্য ৫টি সেন্টারও ঠিক করে দেয়া হয়েছে। তবে যে পাঁচ দিন দর্শকরা থাকতে পারবেন না, সেই দিনগুলোর অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
এছাড়া এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানসহ অন্য পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রদর্শন করা হবে। প্রত্যেক দিনের অনুষ্ঠান টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
বাকি ৫ দিনের অনুষ্ঠান রেকর্ড করে লাইভ করা হবে। কোনো উপস্থিতি থাকবে না।
মুজিব চিরন্তনে যা থাকছে
১৭ মার্চ: আয়োজনের থিম ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’। এদিন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মু. সালেহ উপস্থিত থাকবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভিডিও বার্তা দেবেন।
১৮ মার্চ: আয়োজনের থিম ‘মহাকালের তর্জনী’। সে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন।
১৯ মার্চ: অনুষ্ঠান ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন।
২০ মার্চ: ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’। এই অনুষ্ঠানে ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আল ওথাইমিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।
২১ মার্চ: আয়োজন ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’। এতে দেশীয় একাডেমিশিয়ানরা বক্তব্য দেবেন।
পরবর্তী পাঁচ দিনের অনুষ্ঠান রেকর্ড করে লাইভ করা হবে। কোনো উপস্থিতি থাকবে না।
২২ মার্চ: আয়োজন ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা।
২৩ মার্চ: ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’। এদিন ইউনেসকোর ডিজি উপস্থিত থাকবেন।
২৪ মার্চ: ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’। এদিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত থাকবেন। শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
২৫ মার্চ: ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’। এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং তাকাশি হাওয়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হাওয়াকাওয়া শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৬ মার্চ: আয়োজন ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।