উপাচার্য কলিমউল্লাহর দুর্নীতি তদন্তে বেরোবিতে ইউজিসির দল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম-দুর্নীতির ১১০টি অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত কমিটি।

রোববার বেলা পৌনে ১২টায় ইউজিসির সদস্য ও তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান।

তারা হলেন- কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব সচিব জামাল উদ্দিন এবং ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের। রাত আটটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট রুমে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন তারা।

এর আগে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক পত্র গত ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক বরাবর পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে এই পত্রের অনুলিপি দেয়া হয় উপাচার্যের একান্ত সচিবকেও। এতে ১৪ মার্চ তদন্তকাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই পত্রে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের দালিলিক প্রমাণাদিসহ সাক্ষীদের উপস্থিত থাকার জন্য তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত ২০১৯ সালে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত ৪৫টি অভিযোগ পরবর্তীতে বেড়ে দাঁড়ায় ১১০টি-তে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও অনুপস্থিতি থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমত পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক প্রশাসনিক পদ দখল ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন।

সম্প্রতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি ১০ তলা ভবন ও একটি স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজেও উপাচার্যের অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে ইউজিসির আরেকটি তদন্ত কমিটি। এজন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযোগ প্রদানকারী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বরাবর পেশ করেছি। সেই প্রেক্ষিতে রোববার এতদিন পর তদন্ত করতে ইউজিসির একটি দল ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছেছেন। আমরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ প্রমাণের কাগজপত্র প্রদান করেছি।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ নিয়ে গঠিত অধিকার সুরক্ষা পরিষদ নামে একটি সংগঠন ভিসির দুর্নীতির ১১১টি অভিযোগের ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে।

শেয়ার করুন