মোদিবিরোধী আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করবে পুলিশ: মনিরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

মনিরুল ইসলাম
মনিরুল ইসলাম। ফাইল ছবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে কেউ রাষ্ট্রের সুনাম নষ্ট করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার এবং সদ্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের (চলতি দায়িত্ব) দায়িত্ব পাওয়া মনিরুল ইসলাম।

আজ রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের আগমন উপলক্ষে ডিএমপি আয়োজিত নিরাপত্তা ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

universel cardiac hospital

মনিরুল ইসলাম বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে সামনে রেখে যারা মোদিবিরোধী মিছিল-মিটিং করছে কিংবা করবে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। না হলে পুলিশ শক্তভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান চলাকালে রাজনৈতিক কর্মসূচি না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভিভিআইপিরা আসবেন তাই রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের নিয়ে এক বড় উৎসব পালনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। ইতিমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বাংলাদেশ সফর প্রায় নিশ্চিত করেছেন।

এত ভিভিআইপি মানুষের চলাচলের কারণে রাজধানীতে যানজট তৈরি হতে পারে জানিয়ে মনিরুল বলেন, রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এর ফলে অধিকাংশ সড়কগুলোতে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। আসন্ন উৎসবে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ উপলক্ষে অনেক সড়কে চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন হবে। রাষ্ট্রের সম্মানের কথা চিন্তা করে জনগণের এইটুকু স্যাক্রিফাইস করতে হবে।

অফিস-আদালত কিংবা পরীক্ষার জন্য বের হলে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগে বের হওয়ার অনুরোধ জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বলেন, ১৭ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে চার দিন ছুটি রয়েছে। এ সময়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সড়কে চলাচলে ভোগান্তি যতটা সম্ভব কমানোর।

নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিটিটিসিতে (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) যোগদান করি। পাঁচ বছর আমি সেখানে কাজ করেছি। এখন সরকার মনে করছে যে অন্য জায়গায় গেলে আমি হয়তো আরও ভালো করবো সে কারণে আমাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) বদলি করা হয়েছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

পুলিশের এই আলোচিত কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু আমি আমার সহকর্মীদের নিয়েই পাঁচ বছর এক জায়গায় কাজ করেছি সেক্ষেত্রে দুঃখ হচ্ছে, ভারাক্রান্ত হচ্ছি। আবার সরকার যেভাবে মনে করেছে ওখানে আমি আরও ভালো কাজ করবো সেটি ভেবেও আনন্দ হচ্ছে। আর আমিতো বাংলাদেশ পুলিশেই আছি, কাছাকাছিই আছি। স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাজও একটু ডিটেইল, সিটিটিসির সাথে কাজের ধরনেও অনেকটা মিল আছে।

সিটিটিসিতে আপনি সফল নাকি ব্যর্থ? জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, হলি আর্টিজান ঘটনার পর সিটিটিসি অনেকগুলো অপারেশনের মাধ্যমে জঙ্গি দমন ও জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে এগুলোর কোনোটিই আমার একক কৃতিত্ব নয়, আমার টিমে যারা কাজ করেছে সফলতাগুলো সকলের, সফলতা বাংলাদেশ পুলিশের। এছাড়াও আমরা অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে ব্যর্থ হইনি সেটি নয়। সফলতা যেগুলো হয়েছে সেগুলো আমার টিমের, ব্যর্থতা যেগুলো হয়েছে সেগুলোর দায় ব্যক্তিগতভাবে আমি দিচ্ছি।

শেয়ার করুন