এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেন

বেনামি ঋণ, অর্থপাচার ও ভুয়া রপ্তানি দেখানোসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেন ও তার পরিবারের দুই সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকে পাঠানো হয়।

ব্যাংক হিসাব জব্দ হওয়া অন্য দুজন হলেন আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ ও পালিত মেয়ে তাজরি আমজাদ।

এর আগে এসএম আমজাদ হোসেনের দেশত্যাগ এবং সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী আগামী ৩০ দিনের জন্য এসব হিসাব স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে তিন দিনের মধ্যে হিসাবের স্থিতি জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কোন নামে কবে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, হিসাবে টাকার পরিমাণ, লেনদেনসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেয় দুদক। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, দুদক গোপন সূত্রে জানতে পেরেছে, এস এম আমজাদ হোসেন ব্যাংকের শেয়ারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছেন। এসব অর্থ অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টাও করছেন তিনি, যা অর্থ পাচার আইনে অপরাধ।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে তার। যুক্তরাষ্ট্রেই দু’টি বিলাসবহুল বাড়ি আছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, একজন কর্মচারীর নামে; ভাই, ভাতিজা, ভাতিজির মালিকানা দেখিয়ে; এমনকি জামানত ছাড়াও ঋণ নেন তিনি।

বিএফইইউ ও দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক তার অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে।

এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন লকপুর গ্রুপের কর্ণধার। দীর্ঘদিন হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ রপ্তানির সঙ্গে জড়িত আমজাদ হোসেন। বাগেরহাটে তার ঘের ও কারখানা রয়েছে বলে জানা যায়।

২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া ৯ ব্যাংকের একটি সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। এসএম আমজাদ শুরু থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান। ঋণ জালিয়াতি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অর্থায়নসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত বছরের ১২ জানুয়ারি তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক। এছাড়া সম্পদ বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছেন এরকম তথ্যের ভিত্তিতে গত ডিসেম্বরে এসএম আমজাদ হোসেন, তার স্ত্রী ও পালিত মেয়ের সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিএসএসইতে চিঠি দেয় সংস্থাটি।

শেয়ার করুন