দেশে করোনার সংক্রমণ দিনে দিনে বাড়তে থাকলেও নতুন করে লকডাউনের চিন্তা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সবার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে এক বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ফিরে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করণীয় বিষয়ে বৈঠকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার ওপর। এজন্য প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিতে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খুরশীদ আলম বলেন, কঠোর লকডাউনের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নাই। তবে আগের যে স্বাস্থ্যবিধি ছিল, সেগুলো বেশি বেশি করে মানা, সেগুলো প্রচার করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- রেস্তোরাঁ, পরিবহনে ভিড় এড়ানো, সবাইকে মাস্ক পরানো, পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় যেন লোকজন ভিড় না করে।
গতবছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মার্চের শেষ দিকে শুরু হয় ‘লকডাউনের’ বিধিনিষেধ। অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল-কারাখানা, বিপণি বিতান ও উপাসনালয় বন্ধ রাখার পাশাপাশি যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়ায় দেশের ১৭ কোটি মানুষও ঘরবন্দি দশার মধ্যে পড়ে।
টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর ৩১ মে থেকে অফিস খোলার পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচালের অনুমতি দেয় সরকার। ধীরে ধীরে শুরু হয় ফ্লাইট চলাচল। আগস্টে বিনোদন কেন্দ্রও খুলে দেওয়া শুরু হয়।
ডিসেম্বরের পর দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও চলতি মার্চের শুরু থেকে তা আবার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার ১৭ শর ঘরে উঠেছে, যা এক মাস আগেও তিনশর ঘরে ছিল। গত দুই দিনেই ২৬ জন করে মারা গেছেন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকার। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক না পরার অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বেশ কিছুদিন। পরে ধীরে ধীরে করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য মানতে অহীনা দেখায় জনসাধারণ। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আবারো স্বাস্থ্যবিধি মানতে কড়াকড়ি আরোপের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৭ জন। এই রোগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ হাজার ৫৯৭ জন।