‘আলো বেশি দেখে মশা বিমানবন্দরে চলে আসে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেবিচক

বিভিন্ন গণমাধ্যমে উত্তর সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম বিষয়ে সোমবার (১৫ মার্চ) যে তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে, সে বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

সেখানে বলা হয়েছে, বিমানবন্দর আলোকিত এলাকা। আলো বেশি দেখে আশেপাশের মশা বিমানবন্দরে চলে আসে। কারণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে- মশা প্রায় ৫ কিলোমিটার চলাচল করতে সক্ষম।

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বেবিচকের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ বক্তব্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ মশক নিধনকল্পে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা অন্যান্য বছরের চেয়ে বিশাল পরিসরে করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- লার্ভা ধ্বংস করা, নিয়মিত ফগিং, পতিত জমি ও জলাশয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় নিশ্চিত করা। যা অন্যবারের চেয়ে বড় পরিসরে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজের জন্য সেই এলাকার ডোবা-জলাশয়গুলো ভরাট করা হয়েছে। বেবিচক আবাসিক এলাকাতেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাল ও জলাশয়গুলো থেকে মশা নিধনকল্পে কচুরিপানা অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, বিমানবন্দর এলাকায় মশক নিধন কর্মকাণ্ড তদারকি করার জন্য গত ২১ জানুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়। টাস্ক ফোর্সে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ২ জন যুগ্মসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিটি করপোরেশন ও বেবিচকের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

এই টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা বেবিচকের গৃহীত মশক নিধন কার্যক্রমগুলো সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন এবং টাস্ক ফোর্সের পর্যবেক্ষণগুলোকে আমলে নিয়ে বেবিচক কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিমান বন্দরের আশেপাশে প্রচুর মশার উপদ্রব এখানে আছে।

কারণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মশা অধিক আলোকিত এলাকায় চলে আসে। বিশেষজ্ঞের মতে, মশা প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আসতে পারে। বিমানবন্দর পরিষ্কার ও আলোকিত হওয়ায় রাত হলেই পাশ্ববর্তী এলাকা হতে মশা চলে আসে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সংঘবদ্ধ কার্যক্রম অপরিহার্য।

বিমানবন্দর এলাকার আশেপাশে বসবাসরত জনসাধারণ এবং জনস্বার্থে নিয়োজিত সিটি কপোরেশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ সমস্যার আশু সমাধান সম্ভব হবে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে আগামী দিনগুলোতে সকলকে সহযোগিতা প্রদান ও বিভিন্ন কার্যক্রম যথাযথভাবে প্রতিপালনে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করে বেবিচক কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৫ মার্চ) মশক নিধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিমানবন্দর রেল স্টেশনের পেছনে, হাজী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা, আশিয়ান সিটি এবং দক্ষিণখান বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় বিমানবন্দরের পেছনে রেলওয়ের একটি খাল, সিভিল এভিয়েশনের একটি খালি জায়গায়, হাজী ক্যাম্পের পাশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি জলাশয়সহ আশিয়ান সিটির বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা, নোংরা-বদ্ধ পানি, কচুরিপানা এবং অসংখ্য মশার লার্ভা দেখতে পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র।

শেয়ার করুন