প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন শুধু আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে। কেউ পেছনে ফেলে দিতে পারবে না।
আজ বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আয়োজন ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি দেশে-বিদেশে সক্রিয়। তারা নানাভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। আসুন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ করে সোনার বাংলার অগ্রগতি অব্যাহত রাখি। এখন শুধু আমাদের এগিয়ে যাবার পালা। পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়বো, এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ যেখানে পৌঁছে গেছে, তার অবনমন করা যাবে না। তবে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আজ ১৭ মার্চ। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মাহাত্মপূর্ণ দিন। ১৯২০ সালের এই দিনে বাংলাদেশের নিভৃত পল্লীতে জন্ম নিয়েছিল এক শিশু। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুনের কোলে। টুঙ্গিপাড়া আলোকিত করে যে শিশু এদিন এসেছিল। সে শিশুই বাংলাদেশে আলো ছড়িয়েছে। এনে দিয়েছে স্বাধীনতা, ভাষা, মানচিত্র ও পতাকা।
তিনি বলেন, মুজিব চিরন্তনে দেশ-বিদেশে আমরা কর্মসূচি নিয়েছি। আমাদের এই অনুষ্ঠান চলবে এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেদিনই আমাদের বিজয় দিবস। সেদিন সারা বাংলাদেশ থাকবে উৎসবমুখর। এ সময় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেসব দেশ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বিকালে ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর মুজিব শতবর্ষের থিম সং উপস্থাপনা করা হয়। এটি লিখেছেন কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও সূর করেছেন নকিব খান। পরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকর্ষণীয় ফ্লাইফাস্টের রেকর্ড ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। দেশের শিল্পীদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ও জাতির পিতা শেখ মুজিবকে নিয়ে গান আর মনোজ্ঞ উপস্থাপনা মুগ্ধ করে সবাইকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপির সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা ও বিখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি প্রমুখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ফাজনা আহমেদ, মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদ, বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।