বড় দরপতনের মধ্য দিয় গত সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এই পতনের মধ্যে পড়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে ‘নেই’ হয়ে গেছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে এই অর্থ হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয় শেয়ারবাজারে। এতেই বড় অঙ্কের এই অর্থ হারান বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে মূল্যসূচকেরও বড় পতন হয়েছে। কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩৪ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। আগের ছয় সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫৩ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকেরও। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৮০ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪১ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ১৮ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৭২টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২১০টির। আর ৮৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৮৬৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২০৯ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬২৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৫৯ কোটি ৫৯৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৪৩২ কোটি ৫১২ লাখ টাকা। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৬৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ২০ দশমিক ৬০ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, রবি, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লুব-রেফ, জিবিবি পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।