সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে দিরাই ও শাল্লা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে চার দিন আগের ওই হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীনসহ মোট ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শাল্লা থানা পুলিশ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে গত বুধবার শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালিয়ে ৬০-৭০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ সে সময় বলেছিল, ‘হেফাজতে ইসলামীর অনুসারীরা’ ওই হামলা চালায়।
শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক বলেছিলেন, গত সোমবার দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সম্মেলনে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। সম্মেলনে মামুনুল হকের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে স্থানীয় এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন।
ওই ঘটনাকে ধর্মীয় উস্কানি আখ্যায়িত করে ওই এলাকার মামুনুল হকের অনুসারীরা মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর বুধবার সকালে কাশিপুর, নাচনী, চণ্ডিপুরসহ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কয়েক হাজার অনুসারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালায়। এসময় বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। লুটপাট করা হয় বিভিন্ন বাড়িতে।
ঘটনার পরদিন শাল্লা থানায় দুটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে পুলিশের করা মামলায় ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়। আর হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুলের করা মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের বেশিরভাগই আসে স্বাধীনের গ্রাম দিরাইয়ের নাচনি থেকে। স্বাধীনের ‘উপস্থিতিতেই’সেদিন হামলা হয়। গতকাল শনিবার ভোরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে স্বাধীন মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।