শনিবার রাতে সাকিব আল হাসানের এক ফেসবুক লাইভের পর থেকে দেশের ক্রিকেটাঙ্গন রীতিমতো উত্তাল। যেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ থেকে শুরু করে বোর্ডের নানান কাজের বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সাকিব। পাশাপাশি কথা বলেছেন নিজের আইপিএল খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়েও।
আজ রোববার সারাদিন সাকিবের এসব বক্তব্যকে ঘিরেই চলেছে নানান আলোচনা। তবে বিসিবির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মেলেনি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া। অবশেষে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত গড়াতে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বললেন বোর্ডের দুই পরিচালক আকরাম খান ও নাইমুর রহমান দুর্জয়।
সাকিব তার লাইভে সরাসরি অভিযোগের তীর ছুড়েছিলেন ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের দিকে। শ্রীলঙ্কা সফরের সময় আইপিএল খেলতে চেয়ে ছুটি নেয়ার বিষয়ে যে চিঠি দিয়েছেন, সেটি আকরাম পড়েননি বলে মন্তব্য করেছেন সাকিব। যে কারণে বারবার সাকিবের টেস্ট খেলতে অনীহা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন আকরাম- এমনটাই বলেছেন সাকিব।
এ বিষয়ে আজ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় বৈঠকের পর আকরাম জানিয়েছেন, সাকিবের আইপিএল খেলার অনাপত্তিপত্র (এনওসি- নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) দেয়ার ব্যাপারে নতুন করে ভাববে বিসিবি। সাকিব টেস্ট খেলতে চাইলে তাকে শ্রীলঙ্কা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আকরাম।
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে আকরাম বলেছেন বোর্ড সভাপতির বাসায় বৈঠকটি সাকিব ইস্যুতে ছিল না। তবে এ বিষয়ে তিনি কথাও বলেছেন ঠিকই। আকরামের ভাষ্য, \আজকে আমাদের মূলত মিটিং ছিল জাতীয় দলের ব্যাপারে। দল এখন নিউজিল্যান্ডে। এসব ব্যাপার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটাও চিন্তা করেছি যাতে আমাদের এটা কোনো প্রভাব না ফেলে দলের ওপর।
তিনি আরও যোগ করেন, সাকিবের ইন্টারভিউ এখনও পুরোপুরি দেখিনি। তবে আপনার কাছ থেকে কিছু শুনেছি। যেখানে অনেক কথার মধ্যে একটা ছিল, ও চিঠি দিয়েছে, আমি নাকি সেই চিঠি পড়িনি। তাহলে ঠিক আছে, আমি ভুল বুঝতে পারি। ও টেস্ট খেলতে চাচ্ছে, ওর কথায় বোঝা গেছে। তাহলে কাল-পরশু বোর্ডের সবার সঙ্গে কথা বলে (আইপিএলের) এনওসি (অনাপত্তিপত্র) নিয়ে চিন্তা করব।
এছাড়া বাকি বিষয়ে পরে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানালেন ক্রিকেট অপারেশনস প্রধান, ‘সাকিবের যদি টেস্ট খেলতে চায় তাহলে খেলবে। যাবে, শ্রীলঙ্কা গিয়ে টেস্ট খেলবে। আর বাকি যেটা আছে, সেটা (সাকিবের ইন্টারভিউ) দেখে বোর্ড এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে যে কী করা যায়, না করা যায়।’
আকরাম আরও যোগ করেন, আমার তো শুধু সাকিবকে নিয়ে দায়িত্ব না, আমার দায়িত্ব পুরো বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। আমি তো এত বড় একটা দায়িত্বে আছি, অনেকদিন ধরেই এ দায়িত্বে আছি। তো ও যদি মনে করে, চিঠি ঠিকভাবে পড়িনি… ওটাই বললাম, আমরা তো শ্রীলঙ্কা যাচ্ছি দুইটা টেস্ট খেলতে… ওখানে আমাদের ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি নাই। তাহলে তো সে ওটার (টেস্ট) জন্যই ছুটি চেয়েছে। এখন সে টেস্ট খেলতে চায়, তাহলে খেলবে। আমরা তাহলে ওর এনওসির ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করব।
উল্লেখ্য, দারাজের ব্যবস্থাপনায় ক্রিকফ্রেঞ্জির লাইভে সাকিব বলেছেন, আমি বিসিবিকে যে চিঠি দিয়েছি, কোথাও বলিনি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি লিখেছি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য খেলতে চাই না। পাপন ভাইকে ধন্যবাদ উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্লেয়ারদের এই স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। মানুষ যে, বারবার বলছে যে টেস্ট খেলতে চাই না। এটা সঠিক নাই। আমি বলেছি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য এই সময়ে আমি আইপিএল খেলতে চাই, (শ্রীলঙ্কা সফরে) ওয়ানডে থাকলেও খেলতাম।