বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ক্যারিশমেটিক ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেতা বলে মন্তব্য করেছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন ক্যারিশমেটিক, সাহসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেতা, দক্ষ সংগঠক এবং দৃঢ়চেতা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
সোমবার (২২ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যা দেবী জানান, প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম সফর হলেও এর আগে ব্যক্তিগতভাবে ঢাকা সফর করেছেন তিনি। বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ সামাজিক ব্যাপক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ভিশন অনুযায়ী বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উন্নয়ন ও মানুষের জীবনযাত্রার মানের অনেক উন্নতি হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির মাধ্যমে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করা একটি বড় জনগোষ্ঠীকে গত কয়েক বছরে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ভৌগোলিক দূরত্ব বেশি নয় জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, ভৌগোলিক নিকটবর্তিতা, একই ধরনের সংস্কৃতি, প্রথাসহ অন্যান্য বিষয় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। ১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর থেকে এটি সব সময় বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর এই সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ নেপাল সফর করেন এবং আজকে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি।
বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, ট্রানজিট, জ্বালানি, পর্যটন, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানুষে-মানুষে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা চলমান রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও বাড়াতে হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি এবং এটি কমানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাজার সুবিধা সম্প্রসারিত হলে বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ক্ষেত্র সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। নেপালের জলবিদ্যুৎ ও বাংলাদেশের গ্যাস দুই দেশের উন্নয়নে একটি গেমচেঞ্জার হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। জ্বালানি বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি।
কানেক্টিভিটি দুই দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিদ্যা দেবী ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট আরও বাড়ানো ও বাংলাদেশের সৈয়দপুর ও নেপালের বিরাটনগরের মধ্যে বিমান চলাচল শুরুর প্রস্তাব রাখেন বক্তব্যে।
তিনি আরও বলেন, নেপালের নদীর সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের নদীর সংযোগ ঘটানো সম্ভব হলে নদীপথে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে কানেক্টিভিটি উন্নত করা সম্ভব হবে এবং বাণিজ্য ও পরিবহন খরচ কমানো যাবে। রেলপথ ও সড়কপথ উন্নয়নের মাধ্যমে কানেক্টিভিটি আরও অর্থবহ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে আমি বলতে চাই, নেপালে রেলওয়ে ট্রানজিটের জন্য রোহানপুরকে পোর্ট অব কল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।