‘বঙ্গবন্ধু সামগ্রিক নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ফাইল ছবি

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সামগ্রিক নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করতেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, জাতীয় জীবন কোনো ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধু নারী-পুরুষের মাঝে পৃথক মর্যাদা রাখেননি এবং সেভাবে তিনি বিষয়টি অনুধাবন করেছেন।

আজ মঙ্গলবার ‘মুজিব চিরন্তন’ ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ৭ম দিনে ‘‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক পরিকল্পনা, গৃহীত কার্যক্রম ও তার বাস্তবায়নের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে নারীর সমঅধিকার, সাম্য ও ক্ষমতায়ন। বঙ্গবন্ধু কেবলমাত্র নারীর সমঅধিকার চেয়েছেন তাই নয় বরং নারীর সমান অধিকার, সমমর্যাদার সাম্য ও স্বাধীনতাকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন এবং আইনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ আইন ১৯৭২ এর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদটা যদি আমরা একটু বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাই ২৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে- ধর্ম, গোষ্ঠী, জাতিবর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে কারো প্রতি রাষ্ট্রদর্শন করবে না। ১৮ এর ২ একটি মৌলিক অধিকার সংবিধানে সন্নিবেশিত। তা হলো জীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ নারীর ক্ষমতায়নের শক্ত ভিত রচনা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্য করার কোনো সুযোগ নেই সংবিধানে। আজ সমগ্র বাংলাদেশে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বস্তরে নারীর সমান অধিকার সুনিশ্চিত।

ড. শিরীন শারমিন বলেন, সংবিধানে বলা আছে যে নারীদের জন্য জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসন থাকবে এবং ১৯৭২ সালে ১৫টি সংরক্ষিত আসন দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। আপনারা লক্ষ্য করবেন যে, বিশ্বের অনেক দেশে আজ পর্যন্ত এই ধরনের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭২ এর পর সংরক্ষিত নারী আসনের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে একাদশ জাতীয় সংসদ যেখানে সংসদ নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেখানে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে।

স্পিকার বলেন, নারীরা যে সংরক্ষিত আসনের সদস্য হবেন তাই নয়, যেকোনো নারী সরাসরি নির্বাচন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রেও কোনো বাধা থাকবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুগভীর প্রজ্ঞা, রাজনৈতিক দর্শন এবং দূরদৃষ্টি তার কারণে এ ধরনের বিধান বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যা আজ বাংলাদেশে নারীর এই অগ্রযাত্রাকে একটি অনন্য আসনে প্রতিষ্ঠা করেছে।

তিনি বলেন, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নারী, বিরোধীদলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ একজন নারী, জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী একজন নারী এবং জাতীয় সংসদের স্পিকারও একজন নারী। সংরক্ষিত আসনে ৫০ জন নারী সদস্য সেই সঙ্গে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নারী সদস্য অর্থাৎ মোট ৭৩ জন নারী সদস্য রয়েছেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনাপর্বে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ছাড়াও ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজুলে ভিডিও বার্তা দেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বন্ধুরাষ্ট্র সুইজারল্যান্ডের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

শেয়ার করুন