বাংলাদেশের সৈয়দপুর ও নেপালের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর বিরাটনগরের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ প্রস্তাব দেন। এছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন নেটওয়ার্ক ব্যবহারেরও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
গতকাল সোমবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বঙ্গভবনে বৈঠককালে বিদ্যা দেবী এ প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
আজস মঙ্গলবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নেপালের রাষ্ট্রপতির সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ কথা জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের পুরোটাই এখন আকাশপথে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে সীমিত। এর বাইরে সড়ক পথে নেপালে যেতে হলে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হয় এবং একাধিকবার ইমিগ্রেশন পার হতে হয়। এটি দুই দেশের মধ্যে চালু থাকা ভিসা-ফ্রি যাতায়াতের প্রকৃত সুফল প্রাপ্তিতে বড় বাধা।
কিন্তু নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে নেপালের বিরাটনগরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের আকাশপথে চলাচল চালু হলে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে নেপালের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা এবং বাংলাদেশের পর্যটকরা অনেক সহজে এবং কম খরচে যাতায়াত করতে পারবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি আমাদের জন্য আনন্দ ও গর্বের বিষয় যে, নেপাল থেকে প্রতি বছর বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের মেডিকেল ও প্রকৌশল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে অধ্যয়ন করতে আসেন। এ সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। অন্যদিকে নেপালে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক প্রেরণকারী দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন সেক্টরে সহযোগিতা নিবিড় করতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে বাংলাদেশকে আমরা সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে তথা মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি হাবে রূপান্তরিত করতে চাই। এজন্য ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত পরিবহন-সংযোগ অবারিত ও সুগম করার নানাবিধ উদ্যোগ চলমান রয়েছে।
দুই দিনের সফরে গতকাল সোমবার বাংলাদেশে আসেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সন্ধ্যায় তিনি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়।
বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রপতি পর্যায়ের প্রথম সফর এটিই।