কোরআন-হাদিসের কোথাও কি এসব অপকর্মের বৈধতা দেওয়া আছে?

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, যে সকল উগ্রবাদী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কোরআন শরীফের কোথাও কি এসব অপকর্মের কোনো বৈধতা দেওয়া আছে? কিংবা মহানবী (সাঃ) এর কোনো হাদিসে এসব অপকর্মের বৈধতা দেওয়া হয়েছে কী?। যদি এসব অপকর্ম ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনার উপর হামলা ভাংচুর ইসলাম সমর্থন না করেন তাহলে আপনারাও ইসলামের বন্ধু নন বরং কোরআন ও ইসলামের শত্রু।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় শহীদ নীরেন্দ্রনাথ ভাষা চত্বর বাংলাদেশর এক অন্যন্য অর্জন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ও উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, যেদিন কোনো একটি রাজনৈতিক দল হঠাৎ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তাদের গৃহীত সকল কর্মসূচি করে সেদিন আমাদের দলের অনেকেই বলেছিলেন বিষয়টি একটু সন্দেহজনক। সেদিন তাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু গতকাল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে তা তো স্পষ্টতই বুঝা যায় ডাল মে কুচ কালা হে। সে রাজনৈতিক দলটির লোকেরা কিন্তু গতকাল ঘরে বসে থাকেনি ধর্মব্যবসায়ীদের সামনে রেখে তারাও সেসময় মাঠে ছিল। আপনারা যদি ভিডিও ক্লিপিংসগুলো দেখেন; দেখবেন সেখানে যেমন জুব্বা দাঁড়ি লোকেরা ছিল তেমনি শার্ট-প্যান্ট পড়া তস্করেরাও ছিল।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ কি আছেন যিনি ফুলকে ঘৃণা করে? ফুলকে ভালোবাসেনা? মানুষ নাকি স্বাভাবিকভাবেই ফুলকে ভালোবাসেন। সুতরাং ফুল যে ভালোবাসে না সে তস্কর, সে ঘাতক, সে ঘৃণ্য খুনি। অথচ গতকালক যেসমস্ত জায়গাগুলোতে আক্রমণ করা হয়েছে সমস্ত জায়গার ফুলের বাগানগুলোকে নস্যাৎ করা হয়েছে। তাহলে যারা এসব অপকর্ম করেছে তারা কারা? তারা খুনিদের বংশধর। কারণ খুনিরা তো একাত্তর সালের ২৬ মার্চ থেকে পরাজয় বরণ করেছিল এবং ১৬ ডিসেম্বর তাদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। কিন্তু তাদের বংশধরেরা এখনও রয়ে গেছে এবং তারাই গতকাল ফুলের বাগানগুলো নস্যাৎ করেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ফুল তো রাজনীতি করে না, ফুল তো জানে না সরকারে কে আছে। ফুল তো জানে না নরেন্দ্র মোদি কে?, শেখ হাসিনা কে?, শেখ মুজিব কে?; ফুল তো জানে না রাজাকার কে? তাহলে ফুলের উপর আপনাদের আক্রোশ কেন? ফুলের উপর আপনাদের আক্রোশ এই জন্য যে আপনারা মানুষ নয়, আপনারা মানুষরূপী দানব।

প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, রেলওয়ে স্টেশন কী কোনো অপরাধ করেছিল? কিন্তু আপনারা রেলস্টেশন ভেঙেছেন। সেখানে আপনারা কী ভেঙেছেন? কম্পিউটারসহ আধুনিক সব যন্ত্রপাতি ভেঙেছেন। কারণ আপনাদের দুশমন হলো আধুনিকতা। আপনারা জেলা প্রশাসকের বাড়ি জাজ সাহেবের বাড়ি,এসপি সাহেবের বাড়িতে আক্রমণ করেছেন। আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণ করেছেন, আর কোথায় আর কোথায় আক্রমণ করেছেন?- যেখান থেকে ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন প্রদান করা হয় সেই সিভিল সার্জন অফিসে। কারণ ভ্যাকসিনের প্রতি আপনাদের একটা আক্রোশ আছে। আপনারা পৌরসভা ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর চালিয়েছেন; এসব স্থাপনাগুলো তো দেশের সকল নাগরিকের জন্য। আপনারা এসবের উপর কিসের জন্য এবং কাদের ইশারায় তাণ্ডব চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন?। আপনারা যদি বাংলাদেশকে অস্বীকার করেন তাহলে দেশ ত্যাগ করে চলে যেতে পারেন।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি- কোনো মওলানা যদি আমাকে বুঝাতে পারেন ফুলে বাগান নষ্ট, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ ধ্বংস করে ইসলাম কায়েম করা যায় অথবা গতকাল আপনারা যেসমস্ত তাণ্ডব চালিয়েছেন তা-ই ইসলাম তাহলে আমি তওবা কাটব। আর যদি বুঝাতে না পারেন তাহলে আমার কাছে তওবা করে আপনারা নতুন করে মুসলমান হবেন। কারণ আমিও একজন মুসলমান।

জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খাঁন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার।

শেয়ার করুন