মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ৯৯৪ জন। একই সময়ে আরও পাঁচ হাজার ৪২ জনের দেহে অদৃশ্য ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। ২৬ হাজার ৬২০টি নমুনা পরীক্ষায় এসব নতুন রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ছয় লাখ পাঁচ হাজার ৯৩৭ জনে।
আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ১৬২ জন। এ পর্যন্ত মোট করোনামুক্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৪০ হাজার ১৮০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৩৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ২৬ হাজার ৬২০টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ, বাকি ১৭ জন নারী। সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। নতুন ৪৫ জনকে নিয়ে মোট আট হাজার ৯৯৪ জনের মৃত্যু হলো অচেনা ভাইরাসটিতে। সবমিলিয়ে পুরুষ ছয় হাজার ৭৭৪ জন, বাকি দুই হাজার ২২০ জন নারী করোনায় মারা গেছেন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব আছেন ২৫ জন। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আট, ৪১ থেকে ৫০ বছরের সাত, ৩১ থেকে ৪০ ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দুজন করে রয়েছেন। এছাড়া অন্যজনের বয়স এক থেকে ১০ বছরের মধ্যে।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নতুন মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩৭, চট্টগ্রামে তিন, রাজশাহী ও খুলনায় দুজন করে এবং সিলেটের এক জন রয়েছেন।
করোনায় গতকালও ৪৫ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদিন বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ১৮১ জন রোগী, যা বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ।
২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণা আসে ১৮ মার্চ।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে পাঁচ সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এদিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।