ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
অভিযোগপত্রে তৃণমূল বলেছে, বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগদান নিয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তাদের মূল আপত্তি সফরের বাকি কর্মসূচি নিয়ে।
পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশের ভোটারদের নিজ দলের প্রতি প্রভাবিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে নরেন্দ্র মোদি ওইসব কর্মসূচি রেখেছিলেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের।
গত ২৬ মার্চ দুইদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। পরের দিন ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মস্থানে যান এবং সেখানে প্রার্থনা করেন তিনি। পরে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী মন্দিরেও যান এ বিজেপি নেতা।
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার নির্বাচন শুরুর দিন মোদির এসব জায়গায় যাওয়া নিয়েই আপত্তি তৃণমূলের।
তাছাড়া সফরে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বিজেপির এমপি শান্তনু ঠাকুরকে কেন সঙ্গে নেয়া হলো? তৃণমূল কিংবা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি- তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
এর আগে, গত শনিবারই নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে ‘বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ’ অর্থাৎ মতুয়াদের কাছে ভোট চাইতে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন অভিযোগ তুলে তার ভিসা ও পাসপোর্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন মমতা।
সেদিন খড়গপুর সদরের এক সভায় তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সময় আপনি বাংলাদেশে কেন? আপনি যদি নির্বাচন চলাকালে বাংলাদেশে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য ভোট চাইতে যান, তাহলে আপনার ভিসা-পাসপোর্ট কেন বাতিল হবে না? আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করব।
মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়ে কথা বলার সময় অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদের ভিসা বাতিলের প্রসঙ্গও টেনে আনেন মমতা। তিনি বলেন, ফেরদৌস নামে এক বাংলাদেশি ফিল্মস্টার এসেছিলেন। ২০১৯ লোকসভায় আমাদের একটা র্যালিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপি এসে সরকারের সঙ্গে কথা বলে তার ভিসা বাতিল করে দিল। আর প্রধানমন্ত্রী ভোট নোটিফিকেশন হওয়ার পরে বিদেশে গিয়ে ভোট নিয়ে কথা বললে কী হয়? আপনার জন্য সব ছাড় আর অন্যদের জন্য নয়?
সূত্র: দ্য হিন্দু, আনন্দবাজার পত্রিকা