ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের হরতালের সময় শহরজুড়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করার পাশাপাশি এই ধরনের তাণ্ডবের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা খুঁজে বের করার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউজে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, সদর থানায় অনেক পুলিশ তিন বছর পার করার পরও কিভাবে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। ঐসব কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে নানান অপকর্মে সঙ্গে জড়িত বলেও তিনি অভিযোগ তুলেন। এসময় হরতালের দিন আগুন নিভানোর ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস অবহেলা এবং পিকেটারদের নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা প্রসঙ্গেও তিনি অভিযোগ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, আমরা সরকারের উপর অতিমাত্রায় নির্ভর হয়ে পড়ছি, যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতালের দিন সরকারের সহায়তা না পেলেও আমার দলীয় শক্তি ব্যবহার করে হেফাজতকে মোকাবিলা করতে পারতাম কিন্তু তার রেজাল্ট সুখকর হতোনা। আমরা ২৬মার্চ থেকে ২৮মার্চ পর্যন্ত সংঘটিত সমস্ত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। যেহেতু হেফাজত আমাদেরকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে , সেহেতু আমাদের বিষয়েও তদন্ত হোক, আমরা বিচারের সম্মুখীন হতে রাজি আছি।
তিনি বলেন, এক মাওলানা আমাকে তিন বার খুনি বলেছে। আমি যেহেতু খুন করিনি এবং কাউকে খুন করার জন্য উসকেও দেয়নি, সেহেতু আমাকে ৭০ হাজার বার খুনি বললেও আমার কিছুই যায় আসে না। তবে মিথ্যা বলায় ঐ মৌলভী ফাসেক হয়ে গেছেন। আর ফাসেকের পিছনে নামাজ পড়া জায়েজ নয়
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফকে উদ্দেশ্য করে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ইনশাআল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আওয়ামী লীগ যেভাবে সংগঠিত আছে, আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে সমস্ত অপশক্তির মোকাবেলা করতে পারব। তবে এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এমপি সাহেব এটা করেছে, সে ওটা করেছে বলে আমরা নিজেদেরকে দুর্বল করি। এধরণের সমালোচনা করা যাবে না।
মত বিনিময় সভায় দলের বিভিন্ন নেতাকর্মী হেফাজতের তান্ডব ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেন। এসময় তারা ডিসি ও এসপি প্রত্যাহারের দাবি জানান। বিশ্ব রোড মোড়ে পুলিশের গুলিতে যারা মারা গেছে তার সমস্ত দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিতে হবে। তার দায় কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের নয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান।
মতবিনিময় সভায় প্রেসক্লাব সহ আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করাও আশ্বাস দেন মাহবুবুল আলম হানিফ।