মামুনুলকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল হেফাজত কর্মীরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হক
সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হক। ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নারীসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার র‌্যয়েল রিসোর্টে পাওয়ার পর তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে হেফাজতের কর্মীরা। ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় ওই রিসোর্টে ব্যাপক ভাংচুর চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। এতে রিসোর্টের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সোনারগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি আই মোশাররফ হোসেন, সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তবিদুর রহমানসহ অর্ধশতাধিক সাংবাদিক। এক পর্যায়ে মাওলানা মামুনুল হককে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ হেফাজত কর্মীরা। পরে তারা মিছিল করে।

এর আগে বিকেল থেকে মাওলানা মামুনুল হককে ওই রিসোর্টে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশসহ সাংবাদিককরা।

ওই সময় ওসি তবিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ অবস্থান করছেন- এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে।

সোনারগাঁও উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এখন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে আছেন। তারা মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, মামুনুল হক সকালে রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষটিতে উঠেন। দুপুর থেকেই এলাকায় চাউর হয় মামুনুল হক এক নারীসহ রিসোর্টে অবস্থান করছেন। এই খবরে এলাকার লোকজন রিসোর্টটি ঘেরাও করে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদ রহমান সন্ধ্যায় এই প্রতিবদেককে জানান, আমরা মামুনুল হকের সঙ্গে কথা বলছি। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মামুনুল হকের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এই দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, অনেকদিন ধরেই মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতের নেতাদের বিষয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নানামুখী এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে আজকের এই ঘটনাটিও ষড়যন্ত্র কিনা, আমরা দলীয়ভাবে তা খতিয়ে দেখব। ঘটনাটি আমরা মাত্র কয়েক মিনিট আগে শুনেছি, আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বশীলরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।

ফেসবুক লাইভে দেখা গেছে, মাওলানা মামুনুল হক বলছেন, তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়েই তিনি সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে যান। তবে সূত্রটি তার দ্বিতীয় বিবাহের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। মজলিসের দায়িত্বশীল এই সূত্রটি জানায়, দ্বিতীয় বিবাহের কথা দলীয়ভাবে আগে অজানা ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে মামুনুল হক প্রকাশ করেননি।

শেয়ার করুন