স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই আমরা মিটিং করেছি। আমরা দেখেছি বিনা অজুহাতে সহিংসতায় নিরীহ লোক প্রাণ হারিয়েছেন। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে যাদের পরিচয় দেখছি ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ অন্যান্য জায়গায়, তারা মাদরাসার ছাত্রের চেয়ে বহিরাগতই বেশি ছিল, সাধারণ মানুষ বেশি ছিল। আমরা কারও প্রাণহানি ঘটুক সেটাও চাই না। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কঠোর অবস্থানে যাব এবং প্রয়োজনে জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে জেলা পর্যায়ের ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বসে যেখানে যা প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা সেই ব্যবস্থাটি করবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা আরেকটি জিনিস লক্ষ্য করেছি, সম্প্রতি উপজেলা ভূমি অফিস, তহসিল অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এখানে অগ্নিসংযোগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই এলাকার জনগণ। সেখানে জমির মালিকানা, জরিপ ও নামজারির নিয়ন্ত্রণ করে ভূমি অফিসগুলো। তার রেকর্ডপত্র যদি পুড়ে যায় তাহলে ভুক্তভোগী হবে সেই এলাকার জনগণ। যেটা আমরা দেখেছিলাম স্বাধীনতাযুদ্ধে অনেক ভূমি অফিস পুড়ে গিয়েছিল, ফলে অনেক বছর লেগেছিল সেটা একটি সিস্টেমে আনার জন্য। সেটি আমরা হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সালথায় উপজেলায় বিনা কারণে, বিনা উস্কানিতে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকেও আহ্বান করব তারা যেন এগুলোর প্রতিবাদ করেন। এবং ভূমি অফিস নষ্ট হলে তারাই ভুক্তভোগী হবেন, সেই জায়গায় তারা যেন এটার প্রতিবাদ করে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেখানেই নাশকতা হবে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। যারা নাশকতা করবেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যারা চিহ্নিত হবেন, দোষী সাব্যস্ত হবেন তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে করে তারা এই ঘটনা সংগঠিত করার প্রয়াস না পান। দীর্ঘক্ষণের মিটিংয়ে এটাই ছিল আমাদের সিদ্ধান্ত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, হেফজখানাগুলোর বিষয়ে তারা বলেছিল, হাফেজরা চর্চায় না থাকলে ভুলে যাবেন। সেজন্যই তাদের অনুরোধে খুলে দেয়া হয়েছিল। আগে তো ২ হাজার বা ৩ হাজার আক্রান্ত হতো। এখন যে ঘটনা ঘটেছে, এখন যে মহামারি ৭ হাজার ৮ হাজার আক্রান্ত হচ্ছে। তাই আমরা সবকিছু বন্ধ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কওমি মাদরাসাসহ যতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, মহামারির কারণে সবগুলোকেই সরকার বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমি অনুরোধ করব সবাই যেন সরকারের এই নির্দেশনা মেনে এই কোভিড নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদেরকে সহযোগিতা করেন। সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠান, বিবাহ, জন্মদিনের উৎসবও বন্ধ করা হয়েছে। এই কয়েকটি দিন সবাইকে বলবো, কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা কোনো জায়গায় যেন লোক সমাগম না হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য।
মামুনুল হককে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের হেফাজতে নিলে তাকে বাইরে দেখা যাচ্ছে কীভাবে? তিনি তো বাইরে দিব্যি ঘুরছেন, তার অত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবসহ সবাইকে নিয়ে। তিনি অপরাধ করলে মামলা তো হবেই, মামলা মামলার গতিতে চলবে। সেখানে কারো হাত নেই। যেই অপরাধ করেন মামলা হবেই এবং অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী আদালত তার বিচার করবে।