বিশ্বজুড়ে ফের লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস মহামারি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় প্রতিদিনই ভাঙছে অতীতের যেকোনও সময়ের সংক্রমণের রেকর্ড। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাণহানিও। ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হিসাবে, বিশ্বে করোনাভাইরাসজনিত মৃত্যু ২০ লাখ ছাড়াতে সময় লেগেছিল এক বছরেরও বেশি। সেখানে পরের ১০ লাখ প্রাণহানি হয়েছে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে।
করোনার প্রকোপ বাড়ছে গোটা বিশ্বেই। তবে ব্রাজিল ও ভারতের মতো দেশগুলোতে রীতিমতো এর বিস্ফোরণ ঘটেছে।
দৈনিক গড় মৃত্যুতে সবার ওপরে রয়েছে ব্রাজিল। প্রতিদিন বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ করোনাজনিত মৃত্যু হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে।
আর গত সোমবার করোনা সংক্রমণে নিজেদের পুরোনো সব রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে একদিনে এক লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সেখানে।
মৃত্যুর ঘটনা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাংলাদেশেও। সরকারি হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে দেশে আরও ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৩৮৪ জনে। এর আগে, গত বছরের ৩০ জুন সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ।
নতুন রেকর্ড হয়েছে সংক্রমণেও। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৭ হাজার ২১৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জনে।
রয়টার্সের পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপীয় অঞ্চলের ৫১টি দেশে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (প্রায় ১১ লাখ) করোনাজনিত প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানি- এই পাঁচটি দেশেই ঘটেছে ইউরোপের ৬০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা।
একক দেশ হিসেবে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাণহানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটি এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছেন, যা বিশ্বে মোট মৃত্যুর প্রায় ১৯ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে গত তিন সপ্তাহ ধরে দ্রুত ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, তবে টিকাগ্রহণের কারণে সেখানে মৃত্যুর হার কিছুটা কমে এসেছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা নামে একটি পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, গত রোববার পর্যন্ত বিশ্বে ৩৭ কোটির কিছু বেশি, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ এক ডোজ করে করোনারোধী টিকা নিয়েছেন।