করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। কাকডাকা ভোর থেকেই সড়কে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন গণপরিবহনের পাশাপাশি প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, হিউম্যান হলার, ভ্যানগাড়ি ও রিকশা অবাধে চলাচল করছে।
এছাড়া রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও গত দুদিনের তুলনায় বহুলাংশে বেড়েছে। সাতসকালেই কোথাও কোথাও যানজটেরও সৃষ্টি হতে দেখা যায়।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সকালে সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্যে চোখে পড়ে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা বাস্তবায়নে গত ৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়। নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু শুরুর দিন থেকেই রাজধানীতে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন পালিত হতে দেখা যায়।
গত বছর সাধারণ ছুটি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোরভাবে পরিবহন ও মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেলেও এবার তা ছিল অনুপস্থিত। লকডাউনের ফলে জীবন ও জীবিকার ওপর আঘাত সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি মানুষ। তাই তাদের লকডাউনের নির্দেশনাও মানতে দেখা যায়নি।
এছাড়া লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মার্কেট খুলে দেয়ার দাবিতে রাজধানীর নিউমার্কেটে, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্টরোডসহ পুরানা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউনের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন এলাকায় বুধবার (৭ এপ্রিল) থেকে গণপরিবহন চলবে। তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ ঘোষণার পর থেকেই লকডাউন বহাল থাকবে কি-না, গণপরিবহন চললে মার্কেট শপিং মল খুলে দেয়া হবে কিনা ইত্যাদি নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে নানা আলোচনা শুরু হয়।
সরকারের একাধিক মন্ত্রী বলছেন, লকডাউন দেয়ার ফলে আগের তুলনায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা বেড়েছে। মানুষ সচেতন না হলে করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।
তারা বলেন, মানুষের জীবন ও জীবিকার কথা ভেবে এবং অফিস আদালতে যাওয়ার অসুবিধার কথা বিবেচনা করে গণপরিবহন চলাচল করতে দেয়া হয়েছে। আজকের পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।