ভারতে করোনা শনাক্তে নতুন রেকর্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতে করোনা শনাক্ত
ছবি : ইন্টারনেট

প্রথমবারের মতো ভারতে এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটিতে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা এক দিনের হিসাবে দেশটিতে রেকর্ড। মারা গেছেন ৬৩১ জন। এর আগে রোববার দেশটিতে শনাক্তের পরিমাণ লাখ ছাড়িয়েছিল।

দেশে তিন দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো লাখ ছাড়ানোর পর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আগামী ৪ সপ্তাহে এটি ‘ভয়াবহ আকার’ ধারণ করতে পারে বলে পূর্বাভাসও দিয়েছে কেন্দ্র।

মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী দিল্লিতে নতুন করে ৫ হাজার ১০০ জন শনাক্ত হয়েছে, যা একদিনের হিসাবে সর্বোচ্চ। চলমান করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে জারি করা রাত্রিকালীন কারফিউ আরোপের মধ্যে নতুন করে এ পরিমাণ শনাক্ত হলো। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সেখানে এই কারফিউ কার্যকর থাকবে বলে জানা যায়।

দেশটির বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো ঘোষিত দৈনিক শনাক্ত সংখ্যা অনুসারে, মঙ্গলবার দেশটিতে একদিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার জন। ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি সর্বপ্রথম করোনা শনাক্তের পর এটি সর্বোচ্চ। এর আগে এত সংখ্যক রোগী আক্রান্ত হয়নি।

তিনদিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো শনাক্তের পরিমাণ লাখ ছাড়িয়েছে। এর আগে রোববার দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩ হাজার ৫৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

গত বছরের তুলনায় ভারতে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ছে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে মানুষের অনীহা পরিলক্ষিত হচ্ছে, মানুষ এগুলো (স্বাস্থ্যবিধি) ‘তিলাঞ্জলি’ (পরিত্যাগ করা) দিয়েছেন।

নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডা. ভি কে পল বলেন, ‘দেশে মহামারি পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। সংক্রমণ আরও বাড়ছে। জনসংখ্যার বড় অংশ এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ প্রথম দফার তুলনায় এবার সংক্রমণের গতি আরও বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।

‘দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জরুরি। আগামী চার সপ্তাহ পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে চলেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সচেষ্ট হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহামারির তীব্রতা বাড়ছে। দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মোটের ওপর দেশজুড়েই এই পরিস্থিতি।’

মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি রাজ্যে রাজ্যে করোনা চিকিৎসা অবকাঠামো আরও উন্নত করা এবং টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার কথাও জানান তিনি।

তবে ব্যাপক সংক্রমণের পরেও ভারতে মৃত্যুর হার অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম বলে জানান তিনি। সব মিলিয়ে মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রের ১০ জেলা, দিল্লি এবং কর্ণাটকের একটি জেলার করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে সব বয়সী মানুষের টিকাদানের ব্যাপারে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্প্রতি ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাদানের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে তারা। বর্তমানে ভারতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে কেবল এই ভ্যাকসিন গ্রহণের অনুমতি রয়েছে।

শেয়ার করুন