তাণ্ডবের পর হেফাজতের মিথ্যাচার: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় জেলা ছাত্রলীগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের পর হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা মিথ্যাচার করে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি তারা হেফাজতের এই কর্মকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ওইদিন আমাদের দলের মিছিলের কেউ মাদ্রাসায় কিংবা তার আশপাশে যায়নি। এমনকি কেউ গুলিও চালায়নি। তারা এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য দিতে পারবে না। হেফাজতের এমন মিথ্যাচার আল্লাহ সইবেন না।’

এ সময় শোভন বলেন, সারা পৃথিবী জেনেছে গত ২৬ মার্চ সমস্ত বাঙালি জাতি যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছিল, তখনই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় হেফাজত সমর্থিত মাদ্রাসাছাত্ররা। হেফাজত নেতারা ঘটনার শুরু থেকেই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৫ এপ্রিল হেফাজত নেতারা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাণ্ডবে হেফাজতের কেউ জড়িত নেই। আমরা তাদের এই বক্তব্যকে নিছক মিথ্যাচার ও জঘন্য অপরাজনীতি বলে মনে করি। তাদের এই বক্তব্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে মারাত্মকভাবে মর্মাহত করেছে।

তিনি বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ওই দিন আমাদের দলের মিছিলের কেউ মাদ্রাসায় কিংবা তার আশপাশে যায়নি। এমনকি কেউ গুলিও চালায়নি। তারা এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য দিতে পারবে না। হেফাজতের এমন মিথ্যাচার আল্লাহ সইবেন না। তারা অপ্রচার করছে আমাদের মিছিল করার কারণেই হামলা ভাঙচুর তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়েছে। তাহলে আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই ২৬ মার্চ কাদের উসকানিতে শহরজুড়ে ভাঙচুর করা হয়েছিল কেন।

সংবাদ সম্মেলনে অরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান শ্রাবণসহ ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, গত ২৬ ও ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস, হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ও জেলা প্রেস ক্লাবসহ অসংখ্য স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। রবিবার সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিষ্ঠানসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, পৌর মিলনায়তন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, পুলিশ লাইন, সদর থানা, খাঁটি হাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, শহরের কেন্দ্রীয় মন্দির শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালী বাড়ি, দক্ষিণ কালী বাড়ি, রেলওয়ে স্টেশন, জেলা আওয়ামী লীগ ও সংসদ সদস্যের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের কার্যালয়, তাঁর নিজের ও শশুরবাড়ি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগার চত্বর ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন।

শেয়ার করুন