ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: হেফাজত নেতা সাজিদুর-মোবারকসহ মদদদাতাদের গ্রেফতার চায় পৌরবাসী

বিশেষ প্রতিবেদক

সাজিদুর রহমান-মোবারক উল্লাহ
২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত কর্তৃক পরিচালিত তাণ্ডবের জন্য রাজপথে নেমে নির্দেশনা দিচ্ছেন মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মোবারক উল্লাহ। ফাইল ছবি

গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ টানা তিন দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস ও স্থাপনায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় অনেক বাড়িঘর। রেলস্টেশন থেকে থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, হিন্দুদের উপাসনালয়, ভূমি অফিস- বাদ যায়নি কিছুই। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনও। হামলার টার্গেট ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির প্রতি ছিল তীব্র ক্ষোভ। প্রতিটি প্রতিকৃতিই খুঁচিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। বলতে গেলে ওই তিন দিন যেন একাত্তরেরই খণ্ডচিত্র প্রত্যক্ষ করেছে জেলাবাসী। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া পৌরসভা। কিন্তু এই ভয়াবহ তাণ্ডবের মদদাতা হিসেবে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাজিদুর রহমান,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহসহ স্থানীয় অনেক হেফাজত নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে উঠে আসলেও এখন পরর্যন্ত তাদেরকে আসামি করে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে শুক্রবাব (৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় মোট ৪৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৩টি, আশুগঞ্জ থানায় ৩টি ও সরাইল থানায় ২টি। এসব মামলায় এজাহারনামীয় ২৮৮ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৫ জনকে।

universel cardiac hospital

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রইছ উদ্দিন বলেন, স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এসব আসামিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের অনেকেই এখন পলাতক। ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদিবিরোধীদের তাণ্ডব

তবে বর্বর এই তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত উসকানিদাতাসহ মূল হোতাদের কাউকেই এখনও আসামি করার খবর পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ হেফাজত নেতৃবৃন্দ এখনও রয়ে গেছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এদিকে মামলায় উসকানিদাতা মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতি মোবারক উল্লাহসহ জেলার অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বকে হুকুমের আসামি না করায় এবং তারা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় পৌরবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌরবাসিন্দা বলেন, হেফাজতে ইসলাম কিছুদিন পরপরই শহরে তাণ্ডব চালায়। বিশেষ করে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার ছাত্ররা ক্ষুদ্র বিষয় নিয়েও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া তারা ভিন্নমতের মানুষদের ওপর সবসময় চড়াও হয় এবং আক্রমণ করতে লাঠিসোঠা নিয়ে মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসে।

তিনি বলেন, এর আগে ২০১৬ সালে এক মাদ্রাসাছাত্রের কাছে রিক্সা ভাড়া ৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা চাওয়ায় এক বৃদ্ধ রিক্সা চালককে মারধর এবং এর জের ধরে রেলস্টেশন, সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঐ ঘটনার জন্য তাদের কোনো ধরনের বিচার হয়নি। এবছরও হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাজিদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মোবারক উল্লাহ নির্দেশে সমগ্র শহর তছনছ করা হয়েছে। এসব ঘটনার বিচার হবে কিনা তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় কারা কারা উসকানি দিয়েছে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার কিন্তু তারপরও মূল উসকানিদাতাদের আসামি করা হচ্ছে না। সেদিন হেফাজত শহরজুড়ে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, সেই ঘটনার প্রায় অর্ধমাস অতিবাহিত হলেও হামলার মদদদাতাদের আসামি করা কিংবা তাদেরকে গ্রেফতারের বিষয়েও আমরা তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করছি না।

তিনি আরও বলেন, শুনেছি এই ঘটনায় সদর থানায় অনেকগুলো মামলা হয়েছে কিন্তু ঐসব মামলার এজহারে নাকি মদদদাতাদের নাম নেই। আমাদের প্রশ্ন হলো- যেসব হেফাজত নেতারা ২৬ মার্চ জ্বালাও পোড়াও এবং ভাঙচুরের জন্য ছাত্রদের উসকে দিয়েছিল তাদেরকে কেন আসামি করা হচ্ছে না? কেন তাদেরকে এখনো গ্রেফতারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না? তাহলে আমরা কী ধরে নিব, অতীতের মতো এবছরও প্রধান উসকানিদাতার পার পেয়ে যাবেন?

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হেফাজতকর্মীদের দেয়া আগুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হেফাজতকর্মীদের দেয়া আগুন। ছবি : সংগৃহীত

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, স্থানীয় সাংসদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পুর্তিতে সমগ্র জাতির সাথে মিলে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছিলাম। প্রত্যেক স্বাধীনতা প্রিয় মানুষ এ দিনটি উদযাপন করেছে আপন উচ্ছ্বাস নিয়ে। ব্যতিক্রম একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান প্রিয় মানুষেরা। এদের অবস্থান হচ্ছে বেঈমানদের সাথে  কেননা দেশপ্রেম হচ্ছে ঈমানের অংশ (হুব্বুল ওয়াতানু মিনাল ঈমান)

তিনি বলেন, যারা জাতীয় সঙ্গীত গায় না, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে না, সেইসব রাজাকার, আল-বদরের ঔরসজাত  কুলাঙ্গারেরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পবিত্র দিনে  ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে,স্মৃতিসৌধে অর্পিত পুষ্পাঞ্জলির মালাগুলোকে পদদলিত করেছে, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার ভেঙেছে, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙেছে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় আক্রমণ চালিয়েছে।  স্পষ্টতই এইসব দুষ্কর্ম স্বাধীনতাবিরোধী তৎপরতা।  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত নেতৃবৃন্দ  এই দায় এড়াতে পারে না।

মোকতাদির চৌধুরী আরও বলেন, হুকুমের আসামি হিসেবে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাজিদুর রহমান, মোবারক উল্লাহ প্রমুখের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাধীনতা প্রিয় জনগণের পক্ষ থেকে জোর দাবি উঠেছে।  আমি আশা করব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবিলম্বে এদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস ও স্থাপনায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় অনেক বাড়িঘর। রেলস্টেশন থেকে থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, হিন্দুদের উপাসনালয়, ভূমি অফিস- বাদ যায়নি কিছুই। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনও। হামলার টার্গেট ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির প্রতি ছিল তীব্র ক্ষোভ। প্রতিটি প্রতিকৃতিই খুঁচিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। বলতে গেলে ওই তিন দিন যেন একাত্তরেরই খণ্ডচিত্র প্রত্যক্ষ করেছে জেলাবাসী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৬ মার্চ ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোদিবিরোধী কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া শহরের সিরাজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও হেফাজতে ইসলামের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন আল-মতিনের নেতৃত্বে প্রথম মিছিল বের হয়। একই সময় স্থানীয় বড় মাদ্রাসা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার শিক্ষক ও হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও জেলা সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও জেলা সেক্রেটারি মোবারক উল্লাহর নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বের হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এই দুই মিছিল থেকেই প্রথম দফায় হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়।

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার ঘটনার অনুসন্ধানকারী বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় দিনের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে নন্দনপুর এলাকায় হেফাজতের সঙ্গে যোগ দেয় জামায়াত-শিবির ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রায় একই সময় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি মিছিলকে কেন্দ্র করেও সংঘর্ষ শুরু হয়। আর তৃতীয় দিনের হরতালকে কেন্দ্র করে হেফাজতের সঙ্গে জামায়াত-শিবির, বিএনপির নেতাকর্মীরা মিলেমিশে তাণ্ডব চালায়।

জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার আশপাশের এলাকা বিএনপি অধ্যুষিত। এ কারণে আওয়ামী লীগের একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা ও আশপাশের মসজিদ থেকে মাইকিংও করা হয়। মিছিল ঠেকাতে একযোগে লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে পড়তে বলা হয় সবাইকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব। ফাইল ছবি

গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, তৃতীয় দিনের হামলা ছিল পরিকল্পিত। এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাংচুর করা হয় জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, পৌর মিলনায়তন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, পুলিশ লাইন, সদর থানা, খাঁটি হাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, শহরের কেন্দ্রীয় মন্দির শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালী বাড়ি, দক্ষিণ কালী বাড়ি, জেলা আওয়ামী লীগ ও সংসদ সদস্যের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের কার্যালয়, তার নিজের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগার চত্বর ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন। হামলাকারীরা সিসিটিভি ক্যামেরাও খুলে নেয়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, সাধারণ হেফাজতকর্মীদের মাথায় সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে নেওয়ার বিষয়টি আসার কথা নয়। এটি জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত কর্মীদের কাজ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম দিন থেকেই হেফাজতের আন্দোলনকে বেগবান করতে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন স্থানীয় জামায়াত নেতা ডা. ফরিদ। জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনির হোসেনের ভাই ঠিকাদার মুক্তার হোসেনও অর্থ সহায়তা দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মুক্তার এলাকায় কওমিপন্থী বলে পরিচিত।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, হেফাজত, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি বিদ্রোহী অংশও মাঠে ছিল বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের এ অংশ পৌর নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও জেলা ছাত্রদলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হকের অনুসারী। হাজী মাহমুদুল হক তার চাচা রতনের মাধ্যমে এ তাণ্ডবে অর্থ সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছেন। তবে মাহমুদুল হক শুক্রবার সকালে জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন।

গত ২৯ মার্চ এ ব্যাপারে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন শেষে  বলেন, হামলার সময় বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুক ও গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। পুলিশও ভিডিও করেছে। সব ধরনের ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের ডিআইজি বলেন, কোনও দল বা বিশেষ গোষ্ঠীকে টার্গেট করে তদন্ত করা হবে না। তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে যাদের নাম উঠে আসবে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

গত ১ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, দেশ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে ছবি ও ভিডিও আছে। সবাইকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।

শেয়ার করুন