মিয়ানমারের পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়ে ১০ পুলিশকে হত্যা করেছে দেশটির এথনিক আর্মির একটি যৌথ দল। এসব নৃগোষ্ঠী পূর্বে মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কথা বলেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শান রাজ্যের নাউনমনে এই ঘটনা ঘটেছে। আরাকান আর্মি, তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক আর্মি জোটের যোদ্ধারা এই হামলা চালিয়েছে।
শান নিউজ জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ১০ পুলিশ নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, `শই ফি মিয়ে‘ নিউজ জানিয়েছে, হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৪। এ বিষয়ে আল জাজিরার পক্ষ থেকে মন্তব্য জানতে চাইলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একজন মুখমাত্র কোনো জবাব দেননি।
আল জাজিরার প্রতিনিধি টনি চেং প্রতিবেশি থাইল্যান্ড থেকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশে যেসব এথনিক আর্মি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তার মধ্যে মিয়ানমারের এথনিক আর্মি প্রাচীনতম। কয়েক দশক ধরে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সাংবাদিক চেং বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা নিজেদের সংগঠিত করছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু নিজ চোখে সেটা দেখতে পারিনি। শনিবার তিনটি যৌথ বাহিনী একত্রে হামলা চালানোর দাবি করেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিসহ তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির নেতৃত্বস্থানীয় ২০ এর অধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। এরপর গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তারা জরুরি অবস্থা জারি করে। কিন্তু মিয়ানমারের সাধারণ জনতা সামরিক শাসন প্রত্যাখান করে এর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে।
অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস জানিয়েছে, মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী এবং পুলিশের গুলিতে ৪৮ শিশুসহ ৬১৪ জনের অধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবুও জান্তা সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে জান্তার সহিংস বিক্ষোভ দমনের মধ্যে মানুষের প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।