চলে গেলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

শামসুজ্জামান খান
ফাইল ছবি

করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলে গেলেন বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ, বাংলা একাডেমির সভাপতি ও সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান (ইন্না লিল্লাহি…. রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। শামসুজ্জামান স্ত্রী ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।

নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন বুধবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

universel cardiac hospital

কয়েক দিন আগে করোনা পজিটিভ হলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানকে। অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১২ এপ্রিল) তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তাঁর স্ত্রীও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।

শামসুজ্জামান খান ১৯৪০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের থেকে শিক্ষাজীবন শেষে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবনের সূচনা। বিভিন্ন সময় মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ, ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্বিবিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি।

২০০৯ সালে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। এরপর তিন মেয়াদে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। পরে তাকে একাডেমির সভাপতি করা হয়।

তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন।

তিনি ইসলামী বিশ্বিবিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন।

লোকশিল্প গবেষক শামসুজ্জামানের রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফোকলোর চর্চা, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, মুক্তবুদ্ধি, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল, বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা, মীর মশাররফ হোসেন : নতুন তথ্যে নতুন ভাষ্যে, সৃজনভুবনের আলোকিত মানুষেরা, রঙ্গরসের গল্পসমগ্র, কিশোর রচনাসমগ্র, বাংলাদেশের উৎসব, বাংলা সন ও পঞ্জিকা, ফোকলোরচিন্তা ইত্যাদি।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০০৯ সালে একুশ পদক পাওয়ার পর ২০১৭ সালে তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।

শেয়ার করুন