সর্বাত্মক লকডাউন: দ্বিতীয় দিনে মানুষের চলাচল বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বাত্মক লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে মানুষের চলাচল বেড়েছে
সংগৃহীত ছবি

করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকাতে সরকারঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন আজ। লকডাউনের প্রথম দিনের চেয়ে আজ ঢাকার রাস্তায় মানুষের সমাগম কিছুটা বেড়েছে। আজ দিনের প্রথম ভাগে সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা থাকবে। লেনদেন চলবে পুঁজিবাজারেও। এছাড়াও জরুরি পরিষেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস খোলা থাকছে।

প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন রাস্তায় পুলিশের অবস্থান তুলনামূলক কম দেখা গেছে। সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ চেকপোস্টগুলো প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন কিছুটা নমনীয় ভাব।

প্রথম দিন যেসব চেকপোস্টে পুলিশ বেশ কঠোর মনোভাব দেখিয়ে প্রায় প্রতিটি গাড়ি আটকে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, আজ তেমনটা দেখা যায়নি। তবে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সব রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না।

লকডাউনের প্রথমদিন পহেলা বৈশাখের ছুটি থাকায় সবকিছু বন্ধ ছিল। ফলে মানুষ ঘর থেকে কম বের হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার ব্যাংক, শেয়ারবাজার, পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান খোলা। ফলে সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ির চলাচলও বেড়েছে কিছুটা।

সকাল সাতটা থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের দলে দলে তাদের কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিকদের অনেকেই তাদের কারখানার আশপাশের এলাকায় বসবাস করায় তাদের পরিবহনের তেমন প্রয়োজন হয়নি। ফলে হেঁটেই কর্মস্থলের দিকে রওনা হয়েছেন।

সর্বাত্মক লকডাউনে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত সারাদেশে সব ধরনের অফিস ও গণপরিবহন, বাজার-শপিংমল, দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ প্রভৃতি বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবার প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কলকারাখা। সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবাও খোলা থাকবে।

এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। খোলা স্থানে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যদি কেনাবেচা করা যাবে ৬ ঘণ্টা। এর আগে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ দেয়া হলেও সেটি মোটেও কার্যকর হয়নি।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বুধবার থেকে কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা বাস্তবায়নে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা।

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হলে পুলিশের পক্ষ থেকে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হওয়ার নিয়ম চালু করা হয়। এর উদ্দেশ্য ‘অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয়’ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা এবং জরুরি বিশেষ প্রয়োজনে যাতায়াতের সুবিধা রাখা।

গতকাল কঠোর লকডাউন শুরুর প্রথম দিন সকাল থেকেই রাজধানীজুড়ে কড়াকড়ি অবস্থা ছিল। সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও অলিগলিতে অনেককে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাদের বেশিরভাগই বের হয়েছিলেন খুচরা জিনিসপত্র এবং কাঁচাবাজারের উদ্দেশে। কিন্তু লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল বেশি দেখা গেছে। ব্যাংক ও পোশাক কারখানা খোলা থাকায় এই চলাচল বেড়েছে। তারা মুভমেন্ট পাস নিয়েই ঘর থেকে কাজে বেরিয়ে পড়েছেন।

কারওয়ান বাজারে গিয়ে মানুষের চলাচল গতকালের চেয়ে বেশি দেখা গেছে। পুলিশ বলছে, রাজধানীর বৃহত্তর পাইকারি কাঁচাবাজার হওয়ায় কারওয়ান বাজার এলাকায় লোকসমাগম বেশি হয়। তবে মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে বাইরে আসা মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সন্তোষজনক উত্তর দিলেও বেশিরভাগই দেখাচ্ছেন খোঁড়া অজুহাত। ফলে কাউকে ফেরত পাঠাতেও দেখা গেছে।

শেয়ার করুন